সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

2013 থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

শান্তিপূর্ণ আন্দোলন, জিহাদ, হারানো মুসলিম গৌরব এবং সেই আদিম বিরোধ

অহিংসা মুসলমানের পরম ধর্ম নয় ! আমরা মুসলমানেরা যোদ্ধার জাতি। এই দুনিয়ায় যদি কারো যুদ্ধ করা সাজে তো সেটা মুসলমানদের। কারণ আমরা যুদ্ধ করি আল্লাহর রাহে। আর খোদার রাহে যে যুদ্ধ , তার চেয়ে অধিক সঙ্গত যুদ্ধ আর কী হতে পারে ! অহিংসা তো আমাদের পরম ধর্ম নয় ! হ্যাঁ , এটা সত্য যে আমরা সদা সহিংস নই। আমরা অনেক সময় ইসলাম প্রচারের জন্য শত অত্যাচার নির্যাতন নীরবে সহ্য করে যাই। দশ কোটি অমুসলিমের মাঝে যখন আমি একা মুসলমান , তখন আমার হাতের অস্ত্র হবে শুধুই কুরআন। আর সেই কুরআনের বাণী প্রচারের জন্য যদি আমাকে মৃত্যুও বরণ করতে হয় , তবুও আমি সশস্ত্র সংগ্রাম করবো না। এ হলো আমাদের নবীর শিক্ষা , আল্লাহর আদেশ। আবার এ - ও সত্য যে আমরা চির - অহিংস নই। যখন আমাদের পর্যাপ্ত লোকবল রয়েছে , যখন দশ কোটির মাঝে আমরা নয় কোটিই মুসলমান ; তখনও আমরা মুখ বুঁজে নির্যাতন সয়ে যাবো , এ আমাদের নীতি নয়। তখন প্রতিষ্ঠিত ইসলামকে রক্ষা করার জন্য যুদ্ধ আমাদের উপর ফরজ। আল্লাহ তায়ালা আমাদের উপর যুদ্ধ ফরজ করেছেন , যদিওবা আমরা তা অপছন্দ করি ( কুরআন , ২ : ২১৬ ) । আবার কখনো কখনো যুদ্ধ নিষিদ্ধও করেছেন , যদিওবা সীমাহীন নির্যাতন আমাদেরকে অস্ত্র...

ইমাম খোমেনীর জীবন : এক ইসলামী বিপ্লবের ইতিহাস

রুহুল্লাহর গল্প ইমাম আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ আল মুসাভী আল খোমেনী। বিশ্ব ইমাম খোমেনীকে প্রথমবারের মত চিনেছে ১৯৭৮ সালের শেষাশেষি , যখন ইরানের রাজতন্ত্রের বিরোধিতা করার কারণে তিনি ফ্রান্সে নির্বাসিত ছিলেন। প্যারিসের অদূরে বসে ইরানের শাহ মুহাম্মদ রেজা পাহলভীর বিরুদ্ধে ইমাম খোমেনীর ঘোষিত যুদ্ধ এবং আমেরিকা বিরোধী কঠোর বক্তব্য এক অভূতপূর্ব মিডিয়া কাভারেজ এনে দিলো , এবং ইমামকে বিংশ শতকের অন্যতম বিপ্লবী চরিত্র হিসেবে পরিচিত করলো। পত্র - পত্রিকা আর নিউজ বুলেটিনে তাঁর ছবি ভরে উঠলো। এই ছবি বিশ্বের অসংখ্য মানুষের কাছে , বিশেষতঃ পশ্চিমা বিশ্বের কাছে নিতান্তই অপরিচিত ছিলো। সাদা দাড়ি এবং কালো পাগড়িধারী এই মানুষটিকে দেখে মনে হতো যেনো ইতিহাসের পাতা থেকে সময় অতিক্রম করে বর্তমানে চলে এসেছেন। তাঁর সমস্তকিছুই ছিলো নতুন আর অপরিচিত। এমনকি তাঁর নামটিও : রুহুল্লাহ। আর দুনিয়ার অসংখ্য পলিটিশিয়ান ও সাংবাদিকদের মনে যে প্রশ্নটি নাড়া দিয়ে যাচ্ছিলো , তা ছিলো : কী ধরণের বিপ্লবী মানুষ এই খোমেনী ?

একটি বাংলাদেশ, অনেকগুলো লোলুপ দৃষ্টি, আর আমাদের সাময়িক বিজয়োল্লাস

বাংলাদেশের রাজনীতিকে ৫৬ হাজার বর্গমাইলের ক্ষুদ্র গণ্ডিতে সীমাবদ্ধ করে চিন্তা করাটা বোকামী। এটা খুবই দুঃখজনক যে , বাংলাদেশের মত ভূ - রাজনৈতিক গুরুত্বসম্পন্ন এলাকার অধিবাসীদের রাজনৈতিক চিন্তা হাসিনা - খালেদার ক্ষমতার পালাবদলের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে আছে। অথচ বিশ্ব ক্ষমতার ভারসাম্যের পরিবর্তনের সাথে সাথে এই ভূখণ্ডের ভূ - রাজনৈতিক গুরুত্ব দিনদিন বেড়েই চলেছে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশের রাজনীতিক , রাজনৈতিক নেতা - কর্মী এবং সর্বোপরি সচেতন মানুষের পক্ষে আর হাসিনা - খালেদা ও বাংলাদেশ - ইন্ডিয়া - আমেরিকার সরল সমীকরণে থাকা চলবে না। বরং এই দেশ ও এর জনগণ আরো বড় সমীকরণের অংশ ; বিশ্ব ক্ষমতার ভারসাম্য পরিবর্তনের একটি নিয়ামক , যা কিনা কিছুদিন আগে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে চীন। বাণিজ্যিক বিষয় ছাড়া চীন সাধারণতঃ কোনো দেশের রাজনৈতিক বিষয়ে কথা বলে না। খুব সচেতনভাবেই তারা এটাকে এড়িয়ে চলে। দিল্লিকা লাড্ডু হলেও সারাবিশ্ব যেখানে গণতন্ত্রের এক দুর্বোধ্য স্ট্যান্ডার্ডের সাথে নিজেদের খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করছে , সেখানে গোটা বিশ্ব ব্যবস্থার বিপরীতে দাঁড়িয়ে স্যোশালিস্ট রাষ্ট্র পরিচালনা করে যাচ্ছে চীন।...

অগুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় বিষয়ে বিবাদ করা প্রসঙ্গে

“ হে মানবজাতি ! আমি তোমাদেরকে এক পুরুষ ও এক নারী থেকে সৃষ্টি করেছি এবং তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি , যাতে তোমরা একে অপরকে চিনতে পারো। নিশ্চয় আল্লাহর কাছে সে - ই সর্বাধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে সর্বাধিক পরহেযগার। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ , সবকিছুর খবর রাখেন।” ( সূরা আল হুজুরাত , ৪৯ : ১৩ ) “ তারা যখন অবাঞ্ছিত কথাবার্তা শ্রবণ করে , তখন তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় এবং বলে , আমাদের জন্যে আমাদের কাজ এবং তোমাদের জন্যে তোমাদের কাজ। সালামুন আলাইকুম। আমরা অজ্ঞদের সাথে জড়িত হতে চাই না।” ( সূরা আল - কাসাস , ২৮ : ৫৫ ) “ আর অবশ্যই আমার প্রেরিত ফেরেশতারা ইব্রাহীমের কাছে সুসংবাদ নিয়ে এসেছিলো , তারা বললো – ' সালাম ', তিনিও বললেন – ' সালাম ' । ...” ( সূরা হুদ , ১১ : ৬৯ ) “ এবং তাদের ( ছেলেদের ) দিক থেকে তিনি ( ইয়াকুব ) মুখ ফিরিয়ে নিলেন এবং বললেন : হায় আফসোস ইউসুফের জন্যে ! এবং দুঃখে তাঁর চক্ষুদ্বয় সাদা হয়ে গেলো। এবং অসহনীয় মনস্তাপে তিনি ছিলেন ক্লিষ্ট।” ( সূরা ইউসুফ , ১২ : ৮৪ ) “ তিনি বললেন : আমি তো আমার দুঃখ ও অস্থিরতা আল্লাহর সমীপেই নিবেদন করছি এবং আল্লাহর পক্ষ থেকে আমি যা...

শিয়া-সুন্নি বিরোধ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন এবং উভয় পক্ষের জবাব

শিয়া-সুন্নি বিভেদ ও দ্বন্দ বহু পুরনো বিষয়। এই দ্বন্দ নিরসনে ইতিহাসে বহু দ্বীনি ব্যক্তিত্ব বৃহত্তর মুসলিম ঐক্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন। বিপ্লবের পরপর ডা. জাকির নায়েকের ওস্তাদ আহমদ দীদাত ইরানের যান এবং সেখান থেকে ফিরে এসে শিয়া-সুন্নি ঐক্য ডায়লগে তাঁর অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন, যা আমি এক সপ্তাহ আগে অনুবাদ করে প্রকাশ করেছিলাম । যা-ই হোক, এই দ্বন্দ নিশ্চিতভাবেই মুসলমানদের জন্য একটি নেতিবাচক ও দুর্বলতার দিক। এমনকি তা অনেককে চরমপন্থার দিকেও নিয়ে গিয়েছে। আগে যেই শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ আলেমসমাজ ও কতিপয় জানাশোনা ব্যক্তির মাঝে সীমাবদ্ধ ছিলো, বর্তমান সহজ তথ্যপ্রযুক্তির যুগে তা প্রায় সকল লেভেলে ছড়িয়ে পড়েছে। দেখা যাচ্ছে যে, একদল আরেক দলকে এমন অনেক অভিযোগ করছে, যেগুলো হয়তো শিয়া-সুন্নি উভয় আলেমই অগ্রহণযোগ্য বলে বাতিল করে দেবেন। তবে তথ্যের অবাধ প্রবাহের একটি সুবিধা হলো, এতে মিথ্যার প্রচার যেমন অতি সহজ, তেমনি একইভাবে মানুষের দ্বারে সত্যকে পৌঁছে দেওয়াও খুব সহজ। আমি ব্যক্তিগতভাবে শিয়া ও সুন্নি উভয়কেই মুসলিম ভাই বলে গণ্য করি। কিন্তু তাদের বৃহত্তর ঐক্যে পৌঁছানোর ব্যর্থতা, পরস্পর শত্রুতা ও প্রেজ...

শিয়া-সুন্নি ঐক্য ডায়লগ এবং আহমেদ দিদাতের ইরান অভিজ্ঞতা

(লেখাটি পিডিএফ আকারে ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন। ) আহমেদ দিদাত ( ১৯১৮ - ২০০৫ ) এর নাম হয়তো অনেকের অজানা থাকবে। তবে ডা . জাকির নায়েকের নাম নিশ্চয়ই অজানা নয়। ডা . জাকির নায়েকের বর্তমান কর্মকাণ্ডের অনুপ্রেরণা হলেন আহমেদ দিদাত। আহমেদ দিদাত , যিনি কিনা ডা . জাকির নায়েকের নাম দিয়েছিলেন " দিদাত প্লাস " – পৃথিবীজুড়ে ঘুরে বেড়ানো এবং তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব নিয়ে লেকচার দেয়া ছিলো তাঁর কাজ। যাহোক , ১৯৭৯ সালে ইমাম খোমেইনীর নেতৃত্বে ইসলামী বিপ্লবের মাধ্যমে ইরানে ২৫০০ বছরের রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে এবং ইসলামী ইরানের জন্ম হয়। বিপ্লব - পরবর্তী ইরানে ভিজিট করেন আহমেদ দিদাত , সাক্ষাৎ করেন ইমাম খোমেইনীর সাথে এবং নিজদেশে ফিরে এসে ১৯৮২ সালের মার্চ মাসে তাঁর অনুভূতি তুলে ধরেন। আহমেদ দিদাতের নানা বিষয়ে বক্তব্য ও চিন্তাভাবনা বাংলা ভাষায় কিছু না কিছু পাওয়া যায়। কিন্তু শিয়া - সুন্নি ঐক্যের এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাঁর চমৎকার বক্তব্যের অনুবাদ কোথাও না পেয়ে সবার সাথে শেয়ার করার উদ্দেশ্যেই অনুবাদ করে ফেললাম। আরেকটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন। মূল অডিও কোথাও কোথাও শুনতে বা বুঝতে অসুবিধা ...

Secularism vs Religion : An Improper Fight ?

The problem with the secularists is that they don't understand history, even though they may read it. They don't understand the pulse of time, and most importantly, they don't understand religion, even though they may study it for the sake of studying their enemy. They don't understand human, though they gain expertise in human psychology. I'll clarify these points shortly. Looking at the human history, it has always been and still is religion that dominates changes, though it may be in positive or negative way. On the other hand, Secularism seems to have lived only for a short period of time, compared to the known history of man. And after the event of 9/11, religion seems to be taking its place back on the table of discussion. Why is that ? This simple observation, a little looking at the past, does not trigger thought in them. That is why they are failing. They are failing everywhere. Now don't get me wrong – because I am saying that secularism is f...

বিতর্ক, যুক্তি-প্রমাণ ও কোরআনের কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্য

বর্তমান যুগের " ইসলামের দিকে দাওয়াত " ও মহানবীর সময়ের " ইসলামের দিকে দাওয়াত " এই দুটির কিছু মৌলিক পার্থক্য অবশ্য - বিদ্যমান : ১ . মুহাম্মাদ ( সা .) ছিলেন আল্লাহর রাসূল। তিনি বলতেন : " আমি একজন সুস্পষ্ট ভয় প্রদর্শনকারী মাত্র। " " আমি আল্লাহর রাসূল , তোমরা আমাকে মান্য করো। " " আমি আল্লাহ কর্তৃক আদিষ্ট হয়েছি তোমাদেরকে সতর্ক করার জন্য ... । " আমরা কিন্তু এই কথাগুলো বলতে পারবো না। অর্থাৎ নিজেকে রাসূল দাবী করে কোরআনের বক্তব্য পেশকারীর কথার যে গুরুত্ব , আমাদের কথার অনুরূপ গুরুত্ব থাকবে না। আমরা কোরআনের কথা ব্যবহার করতে পারবো ঠিকই , কিন্তু নিজেকে রাসূল দাবী করতে পারবো না। এটি একটি মৌলিক পার্থক্য। ২ . আরেকটি পার্থক্য হচ্ছে , কোরআন ২৩ বছর ধরে নাযিল হয়েছিলো। গোটা কোরআন পড়লে দেখতে পাই যে , বিভিন্ন স্থানে মানুষকে আল্লাহর প্রতি আহ্বান করা হয়েছে , যুক্তি প্রদর্শন করা হয়েছে আল্লাহর অস্তিত্ব কিংবা একত্বের ব্যাপারে। এখন , ইতিহাস থেকে আমরা যতটুকু জানি , তাতে এ সংক্রান্ত সকল আয়াত একত্রে নাযিল হয়নি , বরং সময়ের প্রেক্ষিতে এক এক সময়ে ...

ইসলাম ?

ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে অনেককেই দেখেছি খুব দ্রুত ( বিবদমান দুটি পক্ষের ) একটি পক্ষ নিতে চান। আমি তাদেরকে দোষ দিচ্ছি না , বরং এর একটি ভিন্ন দিকে আলোকপাত করতে চাচ্ছি। আমি যতদূর বুঝতে পেরেছি তা হলো , এর পিছনে একপ্রকার অনিরাপত্তার অনুভুতি (feeling of insecurity) কাজ করে। আর তাদের এই ইনসিকিওর ফিল করার পিছনে একটি বড় কারণ আমরা নিজেরাই। বিশেষত যারা ঐ বিভক্তির বিষয়ে লড়াই করছেন এবং যারা বিভক্তির বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান রাখেন। কিভাবে , তা বলি। সবচে ' সহজ উদাহরণ হলো শিয়া - সুন্নি বিভেদ। কেউ হয়তো নতুন নতুন ইসলামের প্রতি ঝুঁকছেন , ইসলামের আচার - অনুষ্ঠান পালন করার চেষ্টা করছেন , পড়াশুনা করার চেষ্টা করছেন। একটা পর্যায়ে এসে শিয়া - সুন্নি বিভেদের বিষয়টি জানতে পারলেন। ব্যক্তিটি নিজে হয়তো সুন্নি সমাজে বেড়ে ওঠা , সুন্নি পরিবারের সদস্য। এদিকে একদল ( বা একজন ) শিয়াপন্থী ব্যক্তি তার সামনে সুন্নিদের ব্যাপক সমালোচনা করছে , বিভিন্ন রেফারেন্স ব্যবহার করে ভুল ধরছে , সুন্নিদেরকে ভ্রান্ত বলছে।

সিরিয়ায় সম্ভাব্য মার্কিন হামলা, মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি এবং ইরান

(মিশরের আলোচনা একটু থিতিয়ে পড়তেই সিরিয়ায় উত্তেজনা শুরু হলো। আমি হয়তো লিখতাম না, কিন্তু  সিরিয়া ইস্যুতে লেখাটা এখন কর্তব্য হয়ে পড়েছে। এই কারণে নয় যে সিরিয়া-কেন্দ্রিক মধ্যপ্রাচ্যের পলিটিক্সের স্বচ্ছ ধারণা এদেশীয় মুসলমানদের নেই, বরং লেখা কর্তব্য এই কারণে যে ছোট-বড় ইসলামপন্থীদের চরম বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা কার্যত বিভক্তি উস্কে দিচ্ছে। ) সম্প্রতি সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করা হয়েছে। এতে অসংখ্য মানুষ মারা গিয়েছে, যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শিশু (অনলাইনে এসব ছবি ও ভিডিও পাওয়া যাচ্ছে)। আমেরিকা ও তার বন্ধুরা তৎক্ষণাত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদকে দায়ী করেছে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে সামরিক প্রস্তুতি নিয়ে খুব শীঘ্রই তারা (সম্ভবত) হামলা চালাতে যাচ্ছে। সিরিয়ায় বিদেশী মদদপুষ্ট বিদ্রোহীদের সাথে ২১ অগাস্ট রাজধানী দামাস্কাসের অদূরে সিরীয় সেনাদের সাথে ব্যাপক যুদ্ধ শুরু হয় বিদ্রোহী গ্রুপের। যুদ্ধের কথা জানানোর কিছুক্ষণ পরেই বিদ্রোহীরা ফেইসবুক পেইজে দাবী করে যে সিরীয় সেনারা রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করেছে। এরপরের ঘটনা সবার জানা। ২০১১ সাল থেকে মার্কিন মদদপুষ্ট বিদ্র...

পৃথিবীর দীর্ঘতম দিনে...

আজ যে দীর্ঘতম দিন ছিলো, তা আমার স্মরণে ছিলো না। খেয়াল হলো যখন প্রকৃতি বললো, "আজকে বড় দিন, আজকে বেশিক্ষণ খেলবো।"  মুহিত, মাহদী, প্রকৃতি, সপ্তমী -- এরা হলো আমার ক্ষুদে বন্ধু। যদিও বন্ধুত্বটা ওদের পক্ষ থেকে কনফার্ম করা হয়নি এখনো ! বিকেল হলে ওরা নিয়ম করে ছাদে খেলতে আসে, আর আমার গাছগুলোর যত্ন নেয়া শেষে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমি ওদের খেলা উপভোগ করি; কখনোবা ঝগড়া মিটমাট করে দিই, কিংবা খেলার নিয়ম ঠিক হলো কিনা, কেউ চুরি করলো কিনা, ইত্যাদি বিচার করি। আজ বিকেলে ছাদে উঠলাম, হাতে এক মগ পানি -- গাছে দিতে হবে। উঠে দেখি পুরো ছাদ পানিতে মোটামুটি ডুবে আছে। পানির ট্যাংক ভরে উপচে পড়ে এই অবস্থা। এদিকে একটা নষ্ট টিউব লাইট দিয়ে ড্রেইন পাইপের ছাঁকনি পরিষ্কার করার চেষ্টা করছে মাহদী, যেনো পানি সরে যায়। ছাদে আরেকটা ড্রেইন পাইপ আছে, কিন্তু সেটার মুখও গাছের পাতা জমে বন্ধ হয়ে আছে। একটা ভাঙা টবের টুকরা দিয়ে জায়গাটা পরিষ্কার করে দিলাম, আর হুহু করে পানি নেমে যেতে লাগলো। কী যেনো কথা বলতে বলতে মুখ তুলে তাকিয়েছি, ততক্ষণে মাহদী হাওয়া ! নিজেকে কেমন একটু বোকা বোকা লাগলো ! মানে বাচ্চাদের উপযোগী করে ক...

বৃহত্তর স্বার্থ ও মুসলমানদের ঐক্যের ভিত্তি

( পূর্বকথা : এই লেখার শিরোনাম হতে পারতো : "অমুকের মুখোশ উন্মোচন" কিংবা "শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্ব" অথবা "সিরিয়ার আসাদ-বিরোধীদের সমর্থন দেবো কি ?" কিন্তু তা না করে সেই পুরনো শিরোনামটাই দিলাম, যেটা টেবিলের সামনে কয়েক সপ্তাহ যাবৎ ঝুলছিলো। পরীক্ষা সামনে, কিন্তু হঠাৎই এই বিষয়ে লেখাটা জরুরী হয়ে পড়েছে।) ভণিতা না করে আসল কথায় আসি। সেদিন "ফেসবুকে সুপরিচিত" একজন ইসলামপন্থী লেখক অত্যন্ত আনন্দ প্রকাশ করে একটি লিঙ্ক শেয়ার দিলেন। সামহোয়্যারইনব্লগের একটি লেখা , শিরোনাম হলো "শিয়া মতবাদ : ইসলামের নামে ভয়ংকর বিশ্বাস ও মুনাফেকির বৃত্তান্ত।" বিভক্তির বিষয় উপস্থাপন করাটা বৃহত্তর স্বার্থে ভালো হবে না, এই মূল বক্তব্যের একটি বড়সড় কমেন্ট পোস্ট করলাম। কিছুক্ষণ পরে লেখক আমার কমেন্টটা মুছে দিলেন। কমেন্ট মোছার কাজ নাস্তিক-শাহবাগিরা করে থাকে; সেই কাজ ইসলামপন্থী লেখককে করতে দেখে বিস্মিত হলাম। সেদিনই আবার একই বিষয়ে গুগল প্লাসে ইসলাম বিষয়ক কমিউনিটির একটি পোস্টে আমার মন্তব্যের প্রতি-উত্তরের জবাব দিতে গিয়ে লক্ষ্য করলাম, আমাকে ব্যান করা হয়েছে। তাই আলাদ...

ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দে কী গভীর রাত এখন !

দিনশেষে সকালের পারফিউমগুলো মিলিয়ে আসে। যে শরীরের ঘ্রাণ জানবার কথা ছিলো, তা আর হয় না। শয়তান মানুষকে প্রতারিত করেছে। আমার কোনো শরীরের ঘ্রাণ নেবার কথা ছিলো না। দীর্ঘদিন ভালোবাসার পর একটা সময় উপলব্ধি করেছি : সুন্দর আঙুল, খাড়া নাক, নরম ঠোঁট, নিষ্ঠুর কিংবা বড় বড় পাঁপড়ির মায়াবী চোখগুলোর পিছনে শয়তান কাজ করেছে। শয়তানের উপর থেকে ভালোবাসা সরিয়ে নিতে কি রক্তক্ষরণ হয়েছে ? কী আশ্চর্য ! নিতান্তই নিষ্পাপ দুর্বলতাগুলোয় শয়তান আঘাত করেছে। তারপর সুযোগ করে নিয়েছে। দিনশেষে আমাকে আল্লাহর কাছে ফিরে যেতে হবে। সময় খুবই কম। ভুল-ভ্রান্তিগুলো এখনই দূর করতে হবে। ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দে কী গভীর রাত এখন !

মতিঝিল গণহত্যা বিষয়ে ইকোনমিস্টের প্রতিবেদন : একটি সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ

৫ই মে'র গণহত্যার ইন্টারন্যাশনাল কাভারেজকে ইসলাপন্থীরা গুরুত্বসহকারে প্রচার-প্রকাশ করছেন। কিন্তু একইসাথে খেয়াল রাখা দরকার যে, ৫ই মে সহ বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ঘটনাবলীতে ইসলাম সার্বিকভাবে জড়িত, এবং ইসলামের বিষয়ে এই মিডিয়াগুলোর অ্যালার্জির কথা অজানা নয়। এজন্যে এদের বিষয়ে সতর্ক হওয়া দরকার। আমি সাধারণত এগুলো পড়ে দেখি না। কয়েকটা কারণে : ১. বাংলাদেশের বিষয়ে বাস্তবতা জানার জন্য আমাকে বিদেশী (এবং বাংলাদেশের শত্রু দেশের) মিডিয়ার শরণাপন্ন হতে হবে না। ২. ইসলামবিরোধী দেশগুলোর মিডিয়া সত্য-মিথ্যা বিকৃত করে কী লিখলো, এটা জানা থাকা দরকার বটে, কিন্তু সেটা দরকার পড়লে ঐ তারিখের নিউজ বের করে দেখা যাবে। তারা সাধারণত বাংলাদেশের আওয়ামী সরকারের মত নিউজ / তথ্য গুম করে না। মোটামুটি একই কারণে আমি পড়ি না প্রথম আলো, কালের কণ্ঠ, বাংলানিউজ২৪, বিডিনিউজ২৪, ইত্যাদি। কারণ কোনো ঘটনায় ওরা কী নিউজ করবে তা ওদের আগেই লিখে দেয়া সম্ভব। যাহোক, ইকোনমিস্টের আগামীকালের প্রকাশিতব্য ম্যাগাজিনের এই লেখাটি অনলাইনে এসেছে :  Political violence in Bangladesh In hot blood The killing of Islamist hardliners promi...

বাঁশেরকেল্লা, ফেইক ছবি আর তথ্য-প্রমাণের দৌড়

পেইজ : বাঁশেরকেল্লা । লাইক সংখ্যা : আড়াই লাখ। পাঠকগোষ্ঠী : ইসলামপন্থী, সরকারবিরোধী, শাহবাগ-বিরোধী। পেইজ : শাহবাগে সাইবার যুদ্ধ । লাইক সংখ্যা : এক লাখ। পাঠকগোষ্ঠী : উপরের বিপরীত। বাঁশেরকেল্লা পেইজ কেনো ৫ই মে'র গণহত্যার নামে কয়েকটা ফেইক ছবি পাবলিশ করলো, তাই নিয়ে গালিগালাজ করে দেশ উদ্ধার করছে তারা। অথচ সেই একই বাঁশেরকেল্লায় প্রকাশিত গণহত্যার অন্যান্য ছবি যেনো তারা দেখতেই পায় না ! দিগন্ত টিভি, ইসলামিক টিভি, আমার দেশ পত্রিকা -- বর্তমান সরকার ইসলামপন্থী মিডিয়াগুলোকে বন্ধ করে দিয়েছে। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে সঠিক তথ্য জানার জন্য তাই প্রায়ই বাঁশেরকেল্লা পেইজে ঢোকা হয়। অথেনটিক নিউজ পাবলিশ করার ক্ষেত্রে তাদের চেষ্টার ত্রুটি নাই। এবং না জেনে ভুল নিউজ / ছবি পাবলিশ করার পর সেটার প্রমাণ পেলে বা বুঝতে পারলে তাদেরকে পোস্ট রিমুভ করতে দেখেছি। ৫ই মে'র গণহত্যার পর শাহবাগীদের পেইজে তাদের বক্তব্য/গালিগালাজগুলো দেখলাম, পড়লাম। প্রাসঙ্গিক কিছু কথা এখানে লিখে রেখে যাই : প্রসঙ্গ : ভেরিফাইড সোর্স বাঁশেরকেল্লা পেইজ কোনো নিউজ পাবলিশ করলে মানুষ প্রশ্ন করতে পারে - সোর্স দেখান। ...

৫ই মে ২০১৩ : বাংলাদেশে ইসলামের ইতিহাসের নতুন অধ্যায়

৫ই মে ২০১৩। বাংলাদেশ নামক ভূখণ্ডে ইসলামের ইতিহাসের একটি অধ্যায় সূচিত হলো। জয়-পরাজয়ের এই অধ্যায়ের সূচনা থেকে যে উপলব্ধি ও শিক্ষাগ্রহণ, তা এখানে লিখে রেখে যেতে চাই। ঘটনার শুরুটা এরকম ছিলো : ৫ই মে ফজরের পর থেকেই ঢাকার ৬টি প্রবেশমুখে লক্ষ লক্ষ মানুষের অবরোধ, বেলা বাড়ার সাথে সাথে মোট সংখ্যা ৫০ লক্ষ ছাড়িয়ে যায়। উপস্থিত পুলিশদেরকে নিজেদের খাবার-পানি-শরবত দিয়ে আপ্যায়ন করলো হেফাজতে ইসলামের কর্মীরা। দুপুর থেকে সেই অ্যাপ্যায়নের জবাব হিসেবে গুলি করে হত্যাযজ্ঞ শুরু হলো, এবং থেমে থেমে চলতে লাগলো। আন্দোলনের নেতা আহমদ শফি সাহেব মতিঝিলের মঞ্চে পৌঁছাতে পারলেন না নিরাপত্তার অভাবে। অনির্দিষ্টকালের অবস্থান শুরু হলো মতিঝিলে। সন্ধ্যার আগ দিয়ে জনতার ভিড়ের মধ্য দিয়ে দুটি লাশ প্রবেশ করলো মঞ্চে; সেই লাশ দেখে কান্না উত্তেজনায় পরিণত হলো। মানুষজন রাস্তার আইল্যান্ডের গাছের ডাল ভেঙে নিতে শুরু করলো। এটি ছিলো বাংলাদেশের ইতিহাস বদলে দেবার ডিসাইসিভ মোমেন্ট। ইতিহাস বদলে দেবার জন্য তখন প্রয়োজন ছিলো শুধু একটি নির্দেশের : রক্তের বদলা নিতে যুদ্ধে নেমে পড়া। পরিবর্তে নির্দেশ এলো শান্ত থাকার, ধৈর্য ধারণ করার ...

ভালোবাসা : তবুও...

জীবনে খুব কম মানুষের মনের কথা জানার সুযোগ হয়েছে। স্বল্প সময়ের জন্যে হলেও অনাবৃত মনের জোয়ার-ভাটা দেখেছি। হয়তো সে জোয়ারে বাঁধ দিতে পারিনি বলে তা আমায় সিক্ত করে গিয়েছে -- কিন্তু ভাটার সময় আমি নিজেকে উজাড় করে দিয়েছি;  যদিও আপন সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করতে পারিনি। যে চাঁদ সাগরে জোয়ার আনে, সে যে নিজেও পৃথিবীর কাছে বাঁধা পড়ে আছে ! ..... ..... ..... ..... ..... ..... .... ..... ..... ..... বাঁধনহারা হবার বাসনাটা অত্যাচারী। কিন্তু যে কখনো বাঁধ ভাঙেনি, সে কী করে বুঝবে বাঁধ ভাঙার আনন্দ ! কিছু বাঁধ ভাঙার পর আর জোড়া দেয়া যায় না। তারা চিরস্থায়ী ক্ষরণের ব্যবস্থা করে দেয়। ছিন্ন ঘুড়ির পরিণতিটা হয়তো খুব করুণ, কিন্তু অসীমাকাশে মুক্ত উড়ে বেড়ানোর যে আনন্দ ঐ বন্ধনহীন মুহুর্তগুলো এনে দেয়, জীবনের দাম কি তার বাজি হতে পারে ? কেউ জানে না। যখন জানে, তখন আর ফিরে আসার সুযোগ থাকে না। এ এক অদ্ভুত বাজি। ..... ..... ..... ..... ..... ..... .... ..... ..... ..... পথিককে ছায়া দিতে যে গাছ রোদে পোড়ে, সেই গাছের জন্য পথিক কী করেছে ? ..... ..... ..... ..... ..... ..... .... ..... ..... ....