- ভাবতেসি সিলেট ট্যুর করবো।
- বাহ ! বেশ তো।
- ফ্রেন্ডরা মিলে যাবো, আর...
- যাও, মজা করো।
- যাবা ?
- ছবি তুলে এনো, আমি দেখবো।
- আমার ক্যামেরার মেগাপিক্সেল কম...
মেগাপিক্সেলের কথা চলে এলো। ভাবলাম, মেগাপিক্সেল কম, তাতে কী ? তার ফ্রেমটা তো বেশ। সেকথা বলায় আরেক বন্ধুর কথা বললো -- তার ফ্রেমটা নাকি আরো বড়। বেশ তো ! বড় ফ্রেম, বড় ছবি।
তবে সে ক্যামেরায় আমার চোখ লাগানো হয় নি।
আমার নিজের ক্যামেরাটার কথা মনে হলো। আধুনিক যুগের চমৎকার সব ক্যামেরার পাশে বেমানান শরীর নিয়ে সে কিছুতেই দাঁড়াতে চায় না ! বেশি ছবি তুলতে পারে না -- ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তার মেমরিও কম। এজন্যে আমি মেগাপিক্সেল বাড়িয়ে নিয়েছি। এক একটা ছবি তুরে সময় নিয়ে দেখি। খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখি।
আজ একটা ছবি তুলেছি। একেবারেই ভালো হয় নি -- বাজে একটা ছবি। বন্ধুকে দেখাতে গিয়েও দেখাই নি। সুন্দর একটা ছবি তুলবো -- অপেক্ষায় আছি।
সুন্দর জিনিসের দেখা মেলা ভার। এতগুলো ছবি তোলো কি একটা দুটো ভালো পাবে। তাও আবার চাঁদের কলঙ্ক, ফুলের ভ্রমর -- কত কী ! রূপচর্চা করতে করতে চাঁদ যখন সুন্দরী হলো, ততদিনে তার কপালে বলিরেখা পড়েছে, আর কপোলে হাসির দাগ স্থায়ী হয়েছে। তবু চাঁদের রূপে আমি মুগ্ধ। তখন জীবনানন্দের চন্দ্রবিলাস একহাতে সরিয়ে আরেক হাতে নজরুলের উন্মাদনা রক্তে ঢালি !
সে যাক। কোথায় আমার ক্যামেরা, আর আমি কোথায় এসে পড়লাম। আমি বেশি ছবি তুলতে পারি নি। মেগাপিক্সেল বাড়ানোয় মেমরি সঙ্কুচিত হয়েছে। কখনোবা কোনো ছবি তুলেছি, ভেবেছি বেশ করে সংরক্ষণ করবো; কিন্তু আমার অনিয়ন্ত্রিত মেগাপিক্সেল তার আউট-অব-ফোকাস জিনিসকেও স্পষ্টপ্রায় করে তুলেছে। তারপর আস্তে করে সে ছবি ফেলে দিয়েছি। কাউকে দেখাবার আগেই।
কোনো কোনো ছবিতে নিজের মূর্তি রেখে আনন্দিত হয়েছি। পরক্ষণেই কুন্ঠাবোধ এসে গলা চেপে ধরেছে। তখন ছবিটাকে ফেলতে পারি নি, কিন্তু নিজের মূর্তিটাকে বের করে এনে ছবির এক্কেবারে পাশে রেখে দিয়েছি।
কিছু ছবি তুলে রেখেছি, কিন্তু সেখানে আমার মূর্তি বসাবার জায়গা নেই। সে ছবিগুলো শুধু পূজা করবার জন্য।
আমি এখন যে ছবিতে আছি, তা খুব একটা সুন্দর না। শীঘ্রই নতুন ছবি তুলবো। ভালো ছবি তোলা না হলে ক্যামেরাটাই বৃথা।
বন্ধুদের যাদের ক্যামেরা আছে, তাদের তোলা ছবিগুলো দেখা হয়ে ওঠে নি।দেখতে হলে কিছু দেখাতেও হয় -- আমি পারি না। তাদের ফ্রেমগুলো পরখ করা হয় নি -- আমার ক্যামেরায় মাউন্ট হয় না।
তবে আমি একটা সুন্দর ছবি তুলেছিলাম। চমৎকার সে ছবি। আমার দেখা শ্রেষ্ঠ ছবি। তাতে রঙ আছে : সবগুরো রঙের কথা মনে নেই, তবে ল্যাভেন্ডার ছিলো, নীল ছিলো, মায়াবী সোডিয়াম বাতির আলো ছিলো, সাদা-কালো আর ফিনিক্সের আগুন ঝরা লাল রঙ ছিলো।
সে ছবি আমি বারবার দেখেছি। দিনভর দেখেছি। সারা রাত দেখেছি। দেখে দেখে চোখ ক্লান্ত হলে আবারো দেখেছি।
মনের মাঝে যখন ছবিটার অনুলিপি তৈরী হয়ে গেলো, তখন ডেভেলপ করতে গিয়ে ফিল্ম পুড়িয়ে ফেলেছি।
নূরে আলম,
মার্চ ৮, ২০১২।
nice metaphor....but need a little editing....
উত্তরমুছুনSo you've got the metaphor ! :p
উত্তরমুছুনহুমম... লেখার ending ভালো। তবে মনে হয় একটু editing ভালো কাজ দিত।
উত্তরমুছুনরহস্য বালিকা has left a new comment on your post "মেগাপিক্সেল":
উত্তরমুছুনহুমম... লেখার ending ভালো। তবে মনে হয় একটু editing ভালো কাজ দিত।