কিছু বিষয় পরিষ্কার করা দরকার।
এই বাংলাদেশে মানুষকে অনেক ভাবে ভাগ করা যায়। আওয়ামী লীগ সমর্থনের ভিত্তিতে, বিএনপি সমর্থনের ভিত্তিকে, জামায়াতে ইসলামীকে সমর্থনের ভিত্তিকে এবং আরো অনেক কিছুর ভিত্তিতে। কিন্তু এই বিবেচনার বাইরে আমি এদেশের মানুষকে ভাগ করেছি ২৮শে অক্টোবর, ২০০৬ এর ঘটনার ভিত্তিতে। ঐদিনের ঘটনাকে যারা সমর্থন করেছে, তাদেরকে অসভ্য বর্বর জানোয়ার হিসেবে বিবেচনা করেছি। সেদিন প্রকাশ্য দিবালোকে শিবিরের কয়েকজন ছেলেকে রাস্তার উপর ফেলে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে লাশের উপর নেচেছে আওয়ামী লীগ। এক সাংবাদিক ভাইয়ের আনা সেই ভিডিও দেখে শিউরে উঠেছিলাম সেই সময়ে। সেই ঘটনা হয়তো এখন পুরনো হয়ে গিয়েছে। হয়তো সেসময়ে অনেকের বয়স কম ছিলো, অনেকে ঘটনাটি দেখেনি কিংবা অনেকের বিবেক-বিচারবুদ্ধি সম্পূর্ণ গড়ে ওঠেনি। তাই আজকে আবার চিন্তা করতে বসেছি।
গতকাল, ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০১২ তারিখে যা ঘটে গেলো এই বাংলাদেশে, তার ভিত্তিতে আবার মানুষকে আলাদা করতে বসেছি। শিবিরের মিছিলে কয়েকজন ছেলের উপর সেই ২৮শে অক্টোবরের নারকীয় তাণ্ডব চালালো আওয়ামী লীগ। রাস্তায় ফেলে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, মাথায়-মুখে লাথি দিয়ে, গায়ের উপর উঠে পারিয়ে তারা মানুষকে মেরেছে। এই বর্বরতার বর্ণনা দেয়া অসম্ভব। আমি টিভির সামনে বসে হতবাক হয়ে দেখছি : ইসলামিক টিভি, দিগন্ত টিভি ও বাংলাভিশন ছাড়া আর সব মিডিয়া ঘটনাটির ভিডিও ও বর্ণনা বেমালুম চেপে গেলো। আওয়ামী লীগ-বিএনপি কিংবা জামায়াতে ইসলামী নয়, যে ব্যক্তিই এই ঘটনাকে সমর্থন করবে, সে সমর্থন করবে ২৮শে অক্টোবরকে, এবং সে অসভ্য বর্বর জানোয়ার। তাদের সাথে আমার কোনো ধরণের সম্পর্ক থাকতে পারে না। এখন স্পষ্ট সময় এসে গিয়েছে তাদের থেকে নিজেদের আলাদা করে নেবার।
সময় এসেছে গিয়েছে তাদের থেকে নিজেদের আলাদা করে নেবার, যারা :
১. এই বর্বরতাকে সরাসরি সমর্থন দিয়েছে
২. যারা এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে কথা না বলে উল্টা শিবিরকে দোষারোপ করেছে
৩. যারা সুশীল সাজার জন্য রাজনৈতিক বিশ্লেষণমূলক কথা বলেছে, কিন্তু এই নারকীয় তাণ্ডবের বিরুদ্ধে স্পষ্ট বক্তব্য দেয়নি
৪. যারা সব রাজনৈতিক দলকে এক ক্যাটেগরিতে ফেলে বিষয়টার গুরুত্ব কমানোর চেষ্টা করেছে, কিন্তু বর্বরতার বিরুদ্ধে স্পষ্ট বক্তব্য দেয়নি
৫. যারা চুপ থেকেছে, এই ঘটনার বিরোধিতা করেনি
৬. এবং তাদের থেকে নিজেদের আলাদা করে নেবার সময় এসেছে, যারা সত্যকে বিকৃত ও পরিবর্তিত করেছে, সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করেছে, এবং এর সাথে জড়িত সকলে।
এই উপরের ক্যাটেগরিতে আমাদের বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, শিক্ষক-গুরুজন, প্রিয়মানুষ, পরিচিতজন কিংবা আরো অনেকে আছে। আমি আজকে তাদের থেকে নিজেকে আলাদা করে নিলাম, হোক সে বন্ধুত্ব যত গভীর, হোক সে আত্মীয় যত কাছের কিংবা সে সম্পর্ক যত মধুর। আল্লাহর অভিশাপ তাদের জন্য; ধ্বংস হোক তারা, যারা জেনেশুনে সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করেছে, ধ্বংস হোক তারা, যারা ব্যক্তিস্বার্থে সত্যের বিরোধিতা করেছে। আল্লাহর অভিশাপ তাদের জন্য, যারা জানাসত্ত্বেও নিজের চোখ-কান-মুখকে সত্যের বিপরীতে ব্যবহার করেছে। ধ্বংস হোক তারা, যারা সত্যাশ্রয়ীদের উপর অত্যাচার করেছে। এবং ধ্বংস হোক তারা, যারা বিবেক ও বিচারবুদ্ধির বিপরীতে আল্লাহর বিরুদ্ধে প্রকাশ্য ও গোপন যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।
তোমরা যারা নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করছো না, তারা জেনে রাখো, তোমাদের থেকে নিজেকে আলাদা করে নিলাম আমি, এবং আলাদা করে নিলো আরো অনেকে। এখন সময় এসেছে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করার, আল্লাহর পক্ষে বা বিপক্ষে : যেকোনো এক দলে নিজেকে ঘোষণা করো, নিজের অবস্থান পরিষ্কার করো। আর এতকিছু দেখেও যদি চুপ থাকো, তবে জেনে রেখো, এই তোমাদেরই অন্তরকে সিলমোহর করে দিয়েছেন আল্লাহ, সুতরাং তোমরা সঠিক পথ খুঁজে পাবে না। তাই তোমাদের চোখ, কান ও মুখ থাকা সত্ত্বেও তোমরা একই ভ্রম বারবার দেখতে থাকো, একই ভুল শুনতে পাও এবং একই অসত্য বারবার বলতে থাকো। চেষ্টা করতে থাকো, তোমরা হয়তো ভেবেছো যে মিথ্যাকে গায়ের জোরে প্রতিষ্ঠিত করবে।
আর তোমরা যারা দেখছো যে আমরা তোমাদের মিথ্যার পক্ষে আস্ফালনের কোনো জবাব দিচ্ছি না, তারা জেনে রাখো : আমাদের এই জবাব না দেওয়াটা তোমাদের অন্তরের সিলমোহরকে আরো দৃঢ় করছে। তোমরা একে সত্যবাদীদের বিরুদ্ধে বিজয় মনে করে উল্লাস করছো; কিন্তু জেনে রাখো, তোমরা ভয়ানক ভুলের মাঝে নিমজ্জিত হয়ে আছো। তোমরা তো মিথ্যার উপর মিথ্যার পাহাড় তৈরী করছো, তোমাদের তো ভুলের উপর আরো ভুল জমা হচ্ছে। তোমরা কি সত্যকে দেখতে পাও না, নাকি এই কথাগুলো তোমাদের অন্তরে কোনো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না ? নাকি এই কথাগুলোও তোমাদের কাছে অপরাপর "হাস্যকর" বিষয় ?
তোমাদের মিথ্যার আপাতঃ বিজয় হচ্ছে। তোমরা উল্লাস করতে থাকো। এই মিথ্যার প্রবাহে নিজেদের গা ভাসিয়ে দাও : স্রোতের সাথে ভাসতে কোনো পরিশ্রম নেইতো, তাই। স্রোতের বিপরীতে খুব কম মানুষই দাঁড়ায়, কিন্তু তারাই মানুষ – তোমরা নও। জেনে রাখো, নিশ্চয়ই একদিন আল্লাহ সকল কিছুর উপর তাঁর দ্বীনকে বিজয়ী করবেন। হয়তো সেই দিনটি আমি দেখতে পাবো না, হয়তো এই পাপাচারীদের অত্যাচারের দুনিয়াতেই আমার মৃত্যু ঘটবে, কিন্তু জেনে রাখো, সেই দিনটি নিশ্চয়ই আসবে। তখন দেখবে সত্যের এক আঘাতে কিভাবে তোমাদের দীর্ঘদিনের গড়ে তোলা মিথ্যার পাহাড় ভেঙে যাচ্ছে, আর মানুষ দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করছে। তোমরা যারা এখন মুসলমান নাম ধারণ করে মুনাফেকী করছো, নিশ্চয়ই সেদিন তোমাদেরকে কোনো একটি পক্ষ অবলম্বন করতে হবে ! নিশ্চয়ই আল্লাহ উত্তম কুশলী, এবং নিশ্চয়ই তিনি তাঁর দ্বীনকে সকল কিছুর উপর বিজয়ী করবেন। সেই দিনটি তো অবশ্যই আসবে। পথে কিছু সত্যবাদীদের তোমরা হত্যা ও নির্যাতন করে নাও, তোমাদের প্রতিফল দেবার দিনতো ঠিকই আসবে।
তোমরা আমার বন্ধু হতে পারো, শিক্ষক হতে পারো, গুরুজন কিংবা প্রিয়ভাজন ব্যক্তি হতে পারো, কিন্তু আমি একটিবারের জন্য হলেও আমার দায়িত্ব পালন করছি – তোমাদেরকে সতর্ক করছি : আল্লাহ যেই বিবেকের শপথ করেছেন, সেই বিবেক ও বিচারবুদ্ধির বিপরীতে যেয়ে আল্লাহর বিরুদ্ধে প্রকাশ্য কিংবা গোপন যুদ্ধ ঘোষণা কোরো না। তোমরা দুনিয়ার সত্যবাদীদের হত্যা করে সাময়িক বিজয়ী হতে পারো, কিন্তু কখনোই আল্লাহর উপর বিজয়ী হতে পারবে না, তা তোমরা ঠিকই জানো। আর ভয় করো কোরআনের প্রতিশ্রুত সেই দিনের, যেদিন তোমার সমস্ত কর্মকাণ্ড তুমি চোখের সামনে দেখতে পাবে, যেদিন এইসব দলীয় পরিচয়, মামা-চাচা কিংবা রেফারেন্সের ফোন কল – কোনো কিছুই কাজে আসবে না। সেই দিনে তো আমাদের সবাইকেই উপস্থিত হতে হবে, তাই না ? নাকি এই প্রযুক্তি ও বিনোদনের বিলাসিতার যুগে তোমাদের সেই দিনের কথা স্মরণ হয় না ?
তোমরা যারা এমনটা করছো, আমি তোমাদেরকে সতর্ক করছি : ইসলামের দুর্দিনে অবিশ্বাসীদের আপাতঃ বিজয় ও শক্তি দেখে মুনাফিক, কাফের কিংবা মুশরিকদের দলে ভিড়ো না। ইসলামের বিজয় হবেই, এবং সেদিন অসংখ্য অবিশ্বাসী দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করবে, কেবল তোমরা মুনাফেকরা প্রত্যাখ্যাত হবে। তোমার অন্তরের খবর তো আল্লাহ জানেন; তিনি তো সকলেরই অন্তরের খবর জানেন, এবং তোমার অন্তরও আল্লাহকে অনুভব করে। নাকি এই কথাগুলো তোমাদের অন্তরে কোনোই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না ?
নূরে আলম
ডিসেম্বর ৫, ২০১২।
এই বাংলাদেশে মানুষকে অনেক ভাবে ভাগ করা যায়। আওয়ামী লীগ সমর্থনের ভিত্তিতে, বিএনপি সমর্থনের ভিত্তিকে, জামায়াতে ইসলামীকে সমর্থনের ভিত্তিকে এবং আরো অনেক কিছুর ভিত্তিতে। কিন্তু এই বিবেচনার বাইরে আমি এদেশের মানুষকে ভাগ করেছি ২৮শে অক্টোবর, ২০০৬ এর ঘটনার ভিত্তিতে। ঐদিনের ঘটনাকে যারা সমর্থন করেছে, তাদেরকে অসভ্য বর্বর জানোয়ার হিসেবে বিবেচনা করেছি। সেদিন প্রকাশ্য দিবালোকে শিবিরের কয়েকজন ছেলেকে রাস্তার উপর ফেলে লগি-বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে লাশের উপর নেচেছে আওয়ামী লীগ। এক সাংবাদিক ভাইয়ের আনা সেই ভিডিও দেখে শিউরে উঠেছিলাম সেই সময়ে। সেই ঘটনা হয়তো এখন পুরনো হয়ে গিয়েছে। হয়তো সেসময়ে অনেকের বয়স কম ছিলো, অনেকে ঘটনাটি দেখেনি কিংবা অনেকের বিবেক-বিচারবুদ্ধি সম্পূর্ণ গড়ে ওঠেনি। তাই আজকে আবার চিন্তা করতে বসেছি।
গতকাল, ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০১২ তারিখে যা ঘটে গেলো এই বাংলাদেশে, তার ভিত্তিতে আবার মানুষকে আলাদা করতে বসেছি। শিবিরের মিছিলে কয়েকজন ছেলের উপর সেই ২৮শে অক্টোবরের নারকীয় তাণ্ডব চালালো আওয়ামী লীগ। রাস্তায় ফেলে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে, মাথায়-মুখে লাথি দিয়ে, গায়ের উপর উঠে পারিয়ে তারা মানুষকে মেরেছে। এই বর্বরতার বর্ণনা দেয়া অসম্ভব। আমি টিভির সামনে বসে হতবাক হয়ে দেখছি : ইসলামিক টিভি, দিগন্ত টিভি ও বাংলাভিশন ছাড়া আর সব মিডিয়া ঘটনাটির ভিডিও ও বর্ণনা বেমালুম চেপে গেলো। আওয়ামী লীগ-বিএনপি কিংবা জামায়াতে ইসলামী নয়, যে ব্যক্তিই এই ঘটনাকে সমর্থন করবে, সে সমর্থন করবে ২৮শে অক্টোবরকে, এবং সে অসভ্য বর্বর জানোয়ার। তাদের সাথে আমার কোনো ধরণের সম্পর্ক থাকতে পারে না। এখন স্পষ্ট সময় এসে গিয়েছে তাদের থেকে নিজেদের আলাদা করে নেবার।
সময় এসেছে গিয়েছে তাদের থেকে নিজেদের আলাদা করে নেবার, যারা :
১. এই বর্বরতাকে সরাসরি সমর্থন দিয়েছে
২. যারা এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে কথা না বলে উল্টা শিবিরকে দোষারোপ করেছে
৩. যারা সুশীল সাজার জন্য রাজনৈতিক বিশ্লেষণমূলক কথা বলেছে, কিন্তু এই নারকীয় তাণ্ডবের বিরুদ্ধে স্পষ্ট বক্তব্য দেয়নি
৪. যারা সব রাজনৈতিক দলকে এক ক্যাটেগরিতে ফেলে বিষয়টার গুরুত্ব কমানোর চেষ্টা করেছে, কিন্তু বর্বরতার বিরুদ্ধে স্পষ্ট বক্তব্য দেয়নি
৫. যারা চুপ থেকেছে, এই ঘটনার বিরোধিতা করেনি
৬. এবং তাদের থেকে নিজেদের আলাদা করে নেবার সময় এসেছে, যারা সত্যকে বিকৃত ও পরিবর্তিত করেছে, সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করেছে, এবং এর সাথে জড়িত সকলে।
এই উপরের ক্যাটেগরিতে আমাদের বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, শিক্ষক-গুরুজন, প্রিয়মানুষ, পরিচিতজন কিংবা আরো অনেকে আছে। আমি আজকে তাদের থেকে নিজেকে আলাদা করে নিলাম, হোক সে বন্ধুত্ব যত গভীর, হোক সে আত্মীয় যত কাছের কিংবা সে সম্পর্ক যত মধুর। আল্লাহর অভিশাপ তাদের জন্য; ধ্বংস হোক তারা, যারা জেনেশুনে সত্যকে মিথ্যার সাথে মিশ্রিত করেছে, ধ্বংস হোক তারা, যারা ব্যক্তিস্বার্থে সত্যের বিরোধিতা করেছে। আল্লাহর অভিশাপ তাদের জন্য, যারা জানাসত্ত্বেও নিজের চোখ-কান-মুখকে সত্যের বিপরীতে ব্যবহার করেছে। ধ্বংস হোক তারা, যারা সত্যাশ্রয়ীদের উপর অত্যাচার করেছে। এবং ধ্বংস হোক তারা, যারা বিবেক ও বিচারবুদ্ধির বিপরীতে আল্লাহর বিরুদ্ধে প্রকাশ্য ও গোপন যুদ্ধ ঘোষণা করেছে।
তোমরা যারা নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করছো না, তারা জেনে রাখো, তোমাদের থেকে নিজেকে আলাদা করে নিলাম আমি, এবং আলাদা করে নিলো আরো অনেকে। এখন সময় এসেছে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করার, আল্লাহর পক্ষে বা বিপক্ষে : যেকোনো এক দলে নিজেকে ঘোষণা করো, নিজের অবস্থান পরিষ্কার করো। আর এতকিছু দেখেও যদি চুপ থাকো, তবে জেনে রেখো, এই তোমাদেরই অন্তরকে সিলমোহর করে দিয়েছেন আল্লাহ, সুতরাং তোমরা সঠিক পথ খুঁজে পাবে না। তাই তোমাদের চোখ, কান ও মুখ থাকা সত্ত্বেও তোমরা একই ভ্রম বারবার দেখতে থাকো, একই ভুল শুনতে পাও এবং একই অসত্য বারবার বলতে থাকো। চেষ্টা করতে থাকো, তোমরা হয়তো ভেবেছো যে মিথ্যাকে গায়ের জোরে প্রতিষ্ঠিত করবে।
আর তোমরা যারা দেখছো যে আমরা তোমাদের মিথ্যার পক্ষে আস্ফালনের কোনো জবাব দিচ্ছি না, তারা জেনে রাখো : আমাদের এই জবাব না দেওয়াটা তোমাদের অন্তরের সিলমোহরকে আরো দৃঢ় করছে। তোমরা একে সত্যবাদীদের বিরুদ্ধে বিজয় মনে করে উল্লাস করছো; কিন্তু জেনে রাখো, তোমরা ভয়ানক ভুলের মাঝে নিমজ্জিত হয়ে আছো। তোমরা তো মিথ্যার উপর মিথ্যার পাহাড় তৈরী করছো, তোমাদের তো ভুলের উপর আরো ভুল জমা হচ্ছে। তোমরা কি সত্যকে দেখতে পাও না, নাকি এই কথাগুলো তোমাদের অন্তরে কোনো প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না ? নাকি এই কথাগুলোও তোমাদের কাছে অপরাপর "হাস্যকর" বিষয় ?
তোমাদের মিথ্যার আপাতঃ বিজয় হচ্ছে। তোমরা উল্লাস করতে থাকো। এই মিথ্যার প্রবাহে নিজেদের গা ভাসিয়ে দাও : স্রোতের সাথে ভাসতে কোনো পরিশ্রম নেইতো, তাই। স্রোতের বিপরীতে খুব কম মানুষই দাঁড়ায়, কিন্তু তারাই মানুষ – তোমরা নও। জেনে রাখো, নিশ্চয়ই একদিন আল্লাহ সকল কিছুর উপর তাঁর দ্বীনকে বিজয়ী করবেন। হয়তো সেই দিনটি আমি দেখতে পাবো না, হয়তো এই পাপাচারীদের অত্যাচারের দুনিয়াতেই আমার মৃত্যু ঘটবে, কিন্তু জেনে রাখো, সেই দিনটি নিশ্চয়ই আসবে। তখন দেখবে সত্যের এক আঘাতে কিভাবে তোমাদের দীর্ঘদিনের গড়ে তোলা মিথ্যার পাহাড় ভেঙে যাচ্ছে, আর মানুষ দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করছে। তোমরা যারা এখন মুসলমান নাম ধারণ করে মুনাফেকী করছো, নিশ্চয়ই সেদিন তোমাদেরকে কোনো একটি পক্ষ অবলম্বন করতে হবে ! নিশ্চয়ই আল্লাহ উত্তম কুশলী, এবং নিশ্চয়ই তিনি তাঁর দ্বীনকে সকল কিছুর উপর বিজয়ী করবেন। সেই দিনটি তো অবশ্যই আসবে। পথে কিছু সত্যবাদীদের তোমরা হত্যা ও নির্যাতন করে নাও, তোমাদের প্রতিফল দেবার দিনতো ঠিকই আসবে।
তোমরা আমার বন্ধু হতে পারো, শিক্ষক হতে পারো, গুরুজন কিংবা প্রিয়ভাজন ব্যক্তি হতে পারো, কিন্তু আমি একটিবারের জন্য হলেও আমার দায়িত্ব পালন করছি – তোমাদেরকে সতর্ক করছি : আল্লাহ যেই বিবেকের শপথ করেছেন, সেই বিবেক ও বিচারবুদ্ধির বিপরীতে যেয়ে আল্লাহর বিরুদ্ধে প্রকাশ্য কিংবা গোপন যুদ্ধ ঘোষণা কোরো না। তোমরা দুনিয়ার সত্যবাদীদের হত্যা করে সাময়িক বিজয়ী হতে পারো, কিন্তু কখনোই আল্লাহর উপর বিজয়ী হতে পারবে না, তা তোমরা ঠিকই জানো। আর ভয় করো কোরআনের প্রতিশ্রুত সেই দিনের, যেদিন তোমার সমস্ত কর্মকাণ্ড তুমি চোখের সামনে দেখতে পাবে, যেদিন এইসব দলীয় পরিচয়, মামা-চাচা কিংবা রেফারেন্সের ফোন কল – কোনো কিছুই কাজে আসবে না। সেই দিনে তো আমাদের সবাইকেই উপস্থিত হতে হবে, তাই না ? নাকি এই প্রযুক্তি ও বিনোদনের বিলাসিতার যুগে তোমাদের সেই দিনের কথা স্মরণ হয় না ?
তোমরা যারা এমনটা করছো, আমি তোমাদেরকে সতর্ক করছি : ইসলামের দুর্দিনে অবিশ্বাসীদের আপাতঃ বিজয় ও শক্তি দেখে মুনাফিক, কাফের কিংবা মুশরিকদের দলে ভিড়ো না। ইসলামের বিজয় হবেই, এবং সেদিন অসংখ্য অবিশ্বাসী দলে দলে ইসলামে প্রবেশ করবে, কেবল তোমরা মুনাফেকরা প্রত্যাখ্যাত হবে। তোমার অন্তরের খবর তো আল্লাহ জানেন; তিনি তো সকলেরই অন্তরের খবর জানেন, এবং তোমার অন্তরও আল্লাহকে অনুভব করে। নাকি এই কথাগুলো তোমাদের অন্তরে কোনোই প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না ?
নূরে আলম
ডিসেম্বর ৫, ২০১২।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
[ব্লগে কমেন্ট পোস্ট করার পরও যদি না দেখায়, তাহলে দ্বিতীয়বার পোস্ট করার প্রয়োজন নেই। খুব সম্ভবত স্প্যাম গার্ড সেটাকে সরিয়ে নিয়েছে, আমি পাবলিশ করে দেবো।]