জীবনের অনেক সময় অনেক কাজে নষ্ট করেছি।
কিন্তু সেজন্যে অনুতাপ করি না।
মনে হয় জীবনের অনেকটা সময় বাকি আছে।
মনে হয় আরো অনেক কিছু করতে পারবো।
রঙিন মুহুর্ত তৈরী করার পিছনে অনেক সময় ব্যয় করেছি। যখনই সুযোগ পেয়েছি, আর সব ফেলে রেখে সর্বোচ্চ সময় ব্যয় করেছি। স্মৃতি তৈরী করেছি। ডায়রির পাতা ভরিয়েছি।
পরে, এক একটা সময়ে ঐ কাজগুলোকে অর্থহীন মনে হয়েছে; যখন দেখেছি সেই রঙগুলো সাদাকালো হয়ে গিয়েছে ! কিন্তু তবু আমি অনুতাপ করি নি। মনে হয় করবোও না কখনো। কারণ , অন্তত ঐ মুহুর্তের জন্যে হলেও তো সময়গুলো চমৎকার ছিলো ! এটা তো নির্দোষ মদের মত, যে মদে পাপ হয় না। খাবার সময়টা অনেক সুখানুভুতি, কিন্তু আফটার ইফেক্টস সুখের হবে কিনা, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না !
এই নির্দোষ মদে অনেক সময় পার করেছি। আফটার ইফেক্টগুলো যখন চমৎকার হয় নি, তখন ঘড়ির দু' ঘন্টাকে চার ঘন্টা মনে হয়েছে। মনে হয়েছে, চারটি ঘন্টা শেষ করে ফেলেছি, এবং তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।
তবে অনুতাপ করি নি।
শিক্ষা হয়েছে অনেক। এখন মনে হয় ভালো মদ চিনতে শিখেছি ! নইলে অন্তত "মাত্রা" জানি ! তবু এই নেশা ছাড়তে পারি না। ভাগ্যের শিশুর মত বারবার ফিরে যাই। এটা দুর্বলতা। কিন্তু এই দুর্বলতায় প্রবল আনন্দ।
আমার রুমের জানালা দিয়ে বহু দূরে এয়ারপোর্টের আকাশ-আলো-করা লাইট দেখা যায়। এইমাত্র অন্ধকার আকাশে টিমটিম করে হারিকেনের মত আলো জ্বালাতে জ্বালাতে একটা প্লেন গেলো। জানালা দিয়ে ঢাকা-শহরের এলোমেলো অপরিকল্পিত বিল্ডিং ছাড়া আর কিছু দেখা যায় না। ভালো লাগার জিনিস বলতে রাতের বেলা এয়ারপোর্ট। যখন দেখি ওখানে আলো জ্বলছে, কিংবা একটা প্লেন উড়ে যাচ্ছে বহু দূর দিয়ে, তখন বেশ কিছু কল্পনা এসে গল্প রচনা করে যায়।
যদিও আমি যীনাতের মত করে আলো গুনতে পারি না, তবে মনে হচ্ছে যেনো সত্যিই গতরাতের চেয়ে আজ রাতে আলো বেশ কম জ্বলছে এই রাতের ঢাকায় !
এখন রোজা। সেহরির সময় উঠে খুব বেশি বাড়িতে আলো জ্বলতে দেখি না। এখানে খ্রিষ্টান বেশি থাকে। এজন্যে বোধহয় আলো কম। তবে একটা সুবিধা হলো, ঘন্টা বাজিয়ে তারা জানান দেয় -- সময় বেশি নেই !
এখানে পাশেই আরেকটা বাড়ি হচ্ছে। সারা রাত সেজন্যে ট্রাকে করে ইট-বালু নামায়। এখন সেই কাজ হচ্ছে। পাথরের টুকরা নামানোর শব্দ হচ্ছে এখন। আমি নিেচ তাকালেই দেখতে পাচ্ছি। ওরা পুরো অন্ধকার একটা রাস্তায় ১০০ ওয়াটের বাল্ব জ্বালিয়ে কাজ করছে। চারিদিক চুপচাপ, শুধু ওদের শব্দ ছাড়া। আমার কাছে এই দৃশ্যটা সবসময়ই পিকনিক পিকনিক মনে হয়। আমি একদিন বারান্দায় দাঁড়িয়ে ওদের কাজ দেখেছিলাম অনেক্ষণ। তখন অবশ্য দানবীয় মেশিন দিয়ে মাটি খোঁড়া হচ্ছিলো -- অনেক আগের কথা সেটা। লোকটা প্রথমে মেশিনের মধ্যে আলো জ্বালিয়ে ঘুমাচ্ছিলো। তারপর একটা গাড়ি আসলো। দুইটা মানুষ নামলো। একজন এগিয়ে গিয়ে ডাক দিলো। ঘুমন্ত লোকটা উঠে কিছুক্ষণের মাঝে মেশিন দিয়ে মাটি খুঁড়তে শুরু করে দিলো। তারপর সেই যান্ত্রিক হাত দিয়েই মাটি ট্রাকে তুলে গুছিয়ে দিলো সুন্দর করে ! ঐ ট্রাক যাবার কিছুক্ষণের মাঝেই আরেকটা ট্রাক। এভাবে চলতে লাগলো। সুন্দর দৃশ্য।
আজ ইউনিভার্সিটিতে ওয়ার্কশপ করেছি। বিষয়টা ছিলো ব্লগিং। আমার করা দ্বিতীয় ওয়ার্কশপ এটা। এর আগেরটায় টেকনিক্যাল কথা অনেক ছিলো। মানুষ পছন্দ করেছে, তবে রেসপন্স পেয়েছি কম। আজ আমরা সবাই মিলে একটা ব্লগ পোস্ট পড়েছি। আবার, আমি আমার ব্লগিঙেতিহাস বলেছি কিছুটা। আজ মজা পেয়েছি, উৎসাহও পেয়েছি এজন্যে যে সবাই মাঝে মাঝেই নানান কথায় হেসেছে। যেমন, ব্লগিঙের জনক জর্ন বারগারের ছবিটা সাজ্জাদ স্যারের মত দেখতে। আরো অনেক কথা। সামহোয়্যারইনে আমি কত গালি খেতাম, ঐসব কথা। অনেকদিন পর, ওয়ার্কশপ করার জন্যে এসব কথা স্মৃতির জঞ্জাল ঘেঁটে বের করে আনলাম। ঐসব স্মৃতিকেও তো আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করেছি !
এই রোজায় রাত জাগা হচ্ছে অনেক। একবারে সেহরি খেয়ে ঘুমাচ্ছি।
কত রোজা গেলো আজ ?
আমি কী সব আবোল-তাবোল লিখছি ? আসলে আমি মদ খাচ্ছি। তবে এ হলো নির্দোষ মদ। এই মদে রোজা নষ্ট হয় না।
নূরে আলম
জুলাই ২৬, ২০১২।
কিন্তু সেজন্যে অনুতাপ করি না।
মনে হয় জীবনের অনেকটা সময় বাকি আছে।
মনে হয় আরো অনেক কিছু করতে পারবো।
রঙিন মুহুর্ত তৈরী করার পিছনে অনেক সময় ব্যয় করেছি। যখনই সুযোগ পেয়েছি, আর সব ফেলে রেখে সর্বোচ্চ সময় ব্যয় করেছি। স্মৃতি তৈরী করেছি। ডায়রির পাতা ভরিয়েছি।
পরে, এক একটা সময়ে ঐ কাজগুলোকে অর্থহীন মনে হয়েছে; যখন দেখেছি সেই রঙগুলো সাদাকালো হয়ে গিয়েছে ! কিন্তু তবু আমি অনুতাপ করি নি। মনে হয় করবোও না কখনো। কারণ , অন্তত ঐ মুহুর্তের জন্যে হলেও তো সময়গুলো চমৎকার ছিলো ! এটা তো নির্দোষ মদের মত, যে মদে পাপ হয় না। খাবার সময়টা অনেক সুখানুভুতি, কিন্তু আফটার ইফেক্টস সুখের হবে কিনা, তা নিশ্চিত করে বলা যায় না !
এই নির্দোষ মদে অনেক সময় পার করেছি। আফটার ইফেক্টগুলো যখন চমৎকার হয় নি, তখন ঘড়ির দু' ঘন্টাকে চার ঘন্টা মনে হয়েছে। মনে হয়েছে, চারটি ঘন্টা শেষ করে ফেলেছি, এবং তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।
তবে অনুতাপ করি নি।
শিক্ষা হয়েছে অনেক। এখন মনে হয় ভালো মদ চিনতে শিখেছি ! নইলে অন্তত "মাত্রা" জানি ! তবু এই নেশা ছাড়তে পারি না। ভাগ্যের শিশুর মত বারবার ফিরে যাই। এটা দুর্বলতা। কিন্তু এই দুর্বলতায় প্রবল আনন্দ।
আমার রুমের জানালা দিয়ে বহু দূরে এয়ারপোর্টের আকাশ-আলো-করা লাইট দেখা যায়। এইমাত্র অন্ধকার আকাশে টিমটিম করে হারিকেনের মত আলো জ্বালাতে জ্বালাতে একটা প্লেন গেলো। জানালা দিয়ে ঢাকা-শহরের এলোমেলো অপরিকল্পিত বিল্ডিং ছাড়া আর কিছু দেখা যায় না। ভালো লাগার জিনিস বলতে রাতের বেলা এয়ারপোর্ট। যখন দেখি ওখানে আলো জ্বলছে, কিংবা একটা প্লেন উড়ে যাচ্ছে বহু দূর দিয়ে, তখন বেশ কিছু কল্পনা এসে গল্প রচনা করে যায়।
যদিও আমি যীনাতের মত করে আলো গুনতে পারি না, তবে মনে হচ্ছে যেনো সত্যিই গতরাতের চেয়ে আজ রাতে আলো বেশ কম জ্বলছে এই রাতের ঢাকায় !
এখন রোজা। সেহরির সময় উঠে খুব বেশি বাড়িতে আলো জ্বলতে দেখি না। এখানে খ্রিষ্টান বেশি থাকে। এজন্যে বোধহয় আলো কম। তবে একটা সুবিধা হলো, ঘন্টা বাজিয়ে তারা জানান দেয় -- সময় বেশি নেই !
এখানে পাশেই আরেকটা বাড়ি হচ্ছে। সারা রাত সেজন্যে ট্রাকে করে ইট-বালু নামায়। এখন সেই কাজ হচ্ছে। পাথরের টুকরা নামানোর শব্দ হচ্ছে এখন। আমি নিেচ তাকালেই দেখতে পাচ্ছি। ওরা পুরো অন্ধকার একটা রাস্তায় ১০০ ওয়াটের বাল্ব জ্বালিয়ে কাজ করছে। চারিদিক চুপচাপ, শুধু ওদের শব্দ ছাড়া। আমার কাছে এই দৃশ্যটা সবসময়ই পিকনিক পিকনিক মনে হয়। আমি একদিন বারান্দায় দাঁড়িয়ে ওদের কাজ দেখেছিলাম অনেক্ষণ। তখন অবশ্য দানবীয় মেশিন দিয়ে মাটি খোঁড়া হচ্ছিলো -- অনেক আগের কথা সেটা। লোকটা প্রথমে মেশিনের মধ্যে আলো জ্বালিয়ে ঘুমাচ্ছিলো। তারপর একটা গাড়ি আসলো। দুইটা মানুষ নামলো। একজন এগিয়ে গিয়ে ডাক দিলো। ঘুমন্ত লোকটা উঠে কিছুক্ষণের মাঝে মেশিন দিয়ে মাটি খুঁড়তে শুরু করে দিলো। তারপর সেই যান্ত্রিক হাত দিয়েই মাটি ট্রাকে তুলে গুছিয়ে দিলো সুন্দর করে ! ঐ ট্রাক যাবার কিছুক্ষণের মাঝেই আরেকটা ট্রাক। এভাবে চলতে লাগলো। সুন্দর দৃশ্য।
আজ ইউনিভার্সিটিতে ওয়ার্কশপ করেছি। বিষয়টা ছিলো ব্লগিং। আমার করা দ্বিতীয় ওয়ার্কশপ এটা। এর আগেরটায় টেকনিক্যাল কথা অনেক ছিলো। মানুষ পছন্দ করেছে, তবে রেসপন্স পেয়েছি কম। আজ আমরা সবাই মিলে একটা ব্লগ পোস্ট পড়েছি। আবার, আমি আমার ব্লগিঙেতিহাস বলেছি কিছুটা। আজ মজা পেয়েছি, উৎসাহও পেয়েছি এজন্যে যে সবাই মাঝে মাঝেই নানান কথায় হেসেছে। যেমন, ব্লগিঙের জনক জর্ন বারগারের ছবিটা সাজ্জাদ স্যারের মত দেখতে। আরো অনেক কথা। সামহোয়্যারইনে আমি কত গালি খেতাম, ঐসব কথা। অনেকদিন পর, ওয়ার্কশপ করার জন্যে এসব কথা স্মৃতির জঞ্জাল ঘেঁটে বের করে আনলাম। ঐসব স্মৃতিকেও তো আস্তাকুঁড়ে নিক্ষেপ করেছি !
এই রোজায় রাত জাগা হচ্ছে অনেক। একবারে সেহরি খেয়ে ঘুমাচ্ছি।
কত রোজা গেলো আজ ?
আমি কী সব আবোল-তাবোল লিখছি ? আসলে আমি মদ খাচ্ছি। তবে এ হলো নির্দোষ মদ। এই মদে রোজা নষ্ট হয় না।
নূরে আলম
জুলাই ২৬, ২০১২।
ওইদিনের ওয়ার্কশপ অন্নেক ভালো হইছিল !আর আমরা চাই আপনি বেশি বেশি ভিবিন্ন ভিবিন্ন রকম মদ পান করবেন আর আমাদের ওয়ার্কশপ এ উপহার দিবেন!!!!!!!!!!
উত্তরমুছুনহা হা হা...
মুছুনআপনার মদ কই ? আপনি কবে লেখালেখি শুরু করবেন !