সুফি ভাইয়েরা জানতে চেয়েছেন, আমি জামাত সাপোর্ট করি কিনা? #১/৬
.
ছবিটা ২০১৬ সালের মে মাসের। জামায়াতে ইসলামী নিয়ন্ত্রিত বিশ্ববিদ্যালয় মানারাতের, যেখান থেকে আমি কম্পিউটার সায়েন্সে পড়েছি। বন্ধু আর জুনিয়রদের সাথে বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম। আমরা পাশ করে গেছি আরো দুই বছর আগে। হঠাৎ করে প্রক্টর স্যার আসলেন। দরজা খুলেই: "আপনি এখানে আসছেন কেন? বের হয়ে যান।" আমরা আদবের সাথে উঠে দাঁড়ালাম। জুনিয়ররা এহেন আচরণ দেখে কিংকর্তব্যবিমূঢ়।
আমি কোনো বিতর্কে গেলাম না। বললাম, আচ্ছা, আমি কথা শেষ হলে চলে যাবো।
স্যার দরজা খুলে ধরে থাকলেন: "না, এখনই বের হয়ে যান।"
আমি সবাইকে সাথে নিয়ে বেরিয়ে আসলাম। জুনিয়ররা রাগে ফুঁসতে লাগলো: "ভাই আজকে আপনার সাথে এরকম করলো কালকে আমাদের সাথেও তো করবে!" আমি ওদেরকে শান্ত করলাম। বললাম, "না, আপনাদের সাথে এমনটা করবে না।"
কেন? কারণ আমার 'আকিদা'। আমাকে তারা 'শিয়া' মনে করে। এবং ভয় পায় যে, আমি ভার্সিটিতে থাকলে জামায়াত-শিবিরের ছেলেদের 'আকিদা' চেইঞ্জ করে ফেলব। তাই জামায়াতের উপর মহল থেকে বিশেষ নির্দেশ এসেছিলো, আমাকে ক্যাম্পাসে অঘোষিতভাবে অবাঞ্ছিত করতে। প্রক্টর স্যার সে আদেশের বাস্তবায়ন করেছেন মাত্র। এখন এই ঘটনার মার্কেটিং করে কি আমি বলব যে, "বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছে জামাত শিবির, কিন্তু নিজেরাই তো ফ্যাসিবাদী কায়দায় বাকস্বাধীনতা হরণ করে।" কখনোই না। কেননা আমার নিজস্ব একটি নীতি আছে, গড়ে ওঠা দৃষ্টিভঙ্গি আছে।
.
আপনারা সুফিরা, কিংবা শিয়ারা কয়জন জামাত-শিবিরের দ্বারা প্রত্যক্ষভাবে ক্ষতির শিকার হয়েছেন? আমি আমার আর দুই-একটা ক্ষতির গল্প বলব। যেন আপনারা আমার অবস্থান বুঝতে পারেন। কেননা একবাক্যে "জামাত করি না" বললেই আপনারা সন্তুষ্ট হয়ে যাচ্ছেন না। কারণ আমার বিভিন্ন লেখালেখি ও শেয়ার করা পোস্ট ভিন্ন ধারণাই দিচ্ছে আপনাদেরকে।
সুফি ভাইয়েরা জানতে চেয়েছেন, আমি জামাত সাপোর্ট করি কিনা? #২/৬
.
এই ছবিটা ২০১৫ সালের। তখন আমি সদ্য পাশ করে বেরিয়েছি, আর মানারাতেই টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে ক্লাস নেই। সিএসই ডিপার্টমেন্ট হেডস্যার জামাতের, আরো অনেক টিচারই জামাতের: আমাকে নেয়ার কোনো কারণ তাদের ছিলো না। কিন্তু আমি গোটা ডিপার্টমেন্টের মধ্যে ভালো ছাত্র হিসেবে চার বছর ধরেই সুপরিচিত, এমনও হয়েছে ছাত্র থাকতেই স্যারের পরিবর্তে আমি ক্লাস নিয়ে দিয়েছি (জুনিয়রদের) -- তাই আমাকে না নিয়েও পারেনি।
৬০ জন স্টুডেন্টের ল্যাব ক্লাস নিতাম আমি। Everything was going good, until - সিমেস্টার শেষের দিকে ডিপার্টমেন্ট হেড একদিন ডেকে বললেন, তোমার আর ক্লাস নিতে হবে না। আমি বললাম, কেন?
তিনি বললেন, আমরা ছাত্রদের ফিডব্যাক নিয়েছি, ক্লাস ভালো হচ্ছে না।
আমি বললাম, কিন্তু ছাত্ররা তো আমাকে বলেছে তাদের প্রোগ্রেস হচ্ছে। এই ফিডব্যাক কিভাবে measure করা হলো?
স্যার বললেন, মিটিঙে অনেক কথাই হয়, সব তো তোমাকে বলা যাবে না। আমি রুম থেকে বেরিয়ে আসলাম।
এরও মাসখানেক আগে আবুল আসাদ সাহেবের ছেলে, তিনিও আমাদের টিচার, আমাকে ডেকে বলেছিলেন, এখন থেকে তুমি যখন ক্লাস নেবে, সাবজেক্ট টিচারও থাকবেন রুমে। আমি বুঝেছিলাম, তাদের ভয়, একা রুমে (!) আমি না আবার ছাত্রদেরকে শিয়া বানিয়ে দেই 😅
সাবজেক্ট টিচার নীরিহ মানুষ, উনি এসব জামাতি সাতে-পাঁচে ছিলেন না।
আমি ছাত্রদেরকে জানালাম, আপনাদের কোর্স গ্রেডিং আমি করব না, ইমেইলগুলো সরাসরি সাবজেক্ট টিচারকে দেবেন। ছাত্ররা ফোন/ মেসেজ দিতে শুরু করলো। তারপর আমি গ্রুপে একটা বিস্তারিত পোস্ট লিখলাম। সেখানে তাদেরকে বুঝালাম যে, এই শিয়া জুজুর ভয়ে জামাতের উপর মহল থেকে এই আচরণ করা হয়েছে। অথচ যদিও ভার্সিটির মধ্যেই শিবিরের সাথী বৈঠক চলে - নানান 'গোপন বৈঠক' চলে, অথচ আমার 'প্রোগ্রামিং ক্লাস' তাদের এত ভয়! তবে ছাত্রদের সাথে আমার সম্পর্ক থাকবে, সেটাও লিখলাম।
ছাত্রদের প্রাইভেট ফেইসবুক গ্রুপ, কিন্তু সেখানেও শিবিরের 'ইনফর্মার' ছিলো। কয়েক ঘন্টার মধ্যে কমেন্টশুদ্ধ পোস্টের প্রিন্টআউট টিচারদের টেবিলে। এবং খানিক পরে আমার বাসায়। আমি তখন ঢাকারই একটা প্রতিষ্ঠানে জব করি, পাশাপাশি সপ্তাহে ২ দিন ক্লাস নিতাম। অফিস থেকে ফিরে দেখি আমার বাসায় সেটার প্রিন্টআউট পৌঁছে গেছে। আব্বু শুধু আমাকে বললো, তুমি ঠিক কাজই করেছ। তুমি দেখবে, এই ছাত্ররা তোমাকে আজীবন মনে রাখবে।
.
আব্বুর কথাটাই ঠিক হয়েছিলো। ঐ ব্যাচের ছাত্ররা আমরা খুব ভালো ফ্রেন্ড হয়ে গিয়েছিলো, এখনও আছে। কিন্তু ঐ হেডস্যারের চেয়ার ছাত্ররা পুড়িয়ে দিয়েছিলো, কয়েক বছর আগে। আর সেই প্রক্টর স্যারকেও বেরিয়ে যেতে হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
তো, এই হলো জামায়াতে ইসলামীর বাকস্বাধীনতা। আওয়ামী লীগের থেকে কি তারা কম ফ্যাসিবাদী? এখন আমি গিয়ে কি এগুলো প্রথম আলোতে লিখব, জামাতের উপর রাগ ঝাড়ার জন্য?
না। কেননা আমার নিজস্ব একটা নীতি আছে, গড়ে ওঠা দৃষ্টিভঙ্গি আছে। আমার জীবনযাত্রা ও কর্ম আমি সেই নীতির আলোকেই পরিচালিত করতে চেষ্টা করি। আপনার চশমা যদি ভিন্ন হয়, তাহলে কনফিউজড হবেন: কখনো আমাকে সুফিবাদী, কখনো শিয়াবাদী, কখনো জামাতি মনে করবেন। কিন্তু আমার তো ভিন্নভাবে গড়ে ওঠা একটা দৃষ্টিভঙ্গি আছে। সেটাও আমি জানাবো। আমার বর্তমান ধর্মীয় রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি, আর জামাত কিংবা অন্য যেকারো প্রতি আমি কেমন দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করি, কেমনটা উচিত বলে মনে করি। আমি আপনাদের ধৈর্য্য কামনা করছি।
সুফি ভাইয়েরা জানতে চেয়েছেন, আমি জামাত সাপোর্ট করি কিনা? #৩/৬
.
ছবিটা ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসের। মানারাত ইউনিভার্সিটিতে 'শিয়া সুন্নি ডিসকাশান' অনুষ্ঠিত হয়েছিলো। শিয়াদের যুক্তিগুলো তুলে ধরব আমি, আর সুন্নিদের যুক্তিগুলো তুলে ধরবেন জহির ভাই (ছবিতে আমার ডানে)। জহির ভাই কিছুদিন হলো শিবির ছেড়ে দিয়েছেন কেননা 'গণতন্ত্র হারাম' যুক্তি তিনি গ্রহণ করেছেন, আর ওদিকে সিরিয়াতে খিলাফাহ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারেও তিনি প্রবল আকর্ষিত। শিবির ত্যাগ করা বেশ কয়েকজন ভাই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন সিরিয়া যাবার জন্য।
তখন আমি সিএসই লাস্ট ইয়ার, লাস্ট সিমেস্টার করতেছি। ডিপার্টমেন্টের সব ছাত্র-শিক্ষক আমাকে চেনে, আর চেনে জহির ভাইকেও। আমরা দুইজনই ফেসবুকে লেখালেখি করি। সেসময় সিরিয়া ইস্যু খুব গরমাগরম চলছিলো, আর আমি খিলাফাহপপন্থীদের বিপক্ষে লিখতাম, আর জহির ভাই লিখতেন শিয়া কাফের বিষয়ে। এতে জুনিয়ররা সবাই কনফিউজড। একদিন আমি আর জহির ভাই কোথায় দাঁড়ায়ে গল্প করতেছি, কয়েজন ছাত্র এসে বললো, ভাই আপনাদেরকে একসাথে পাইসি, আপনারা পাল্টাপাল্টি পোস্ট দেন, আমরা কনফিউজড, এবার আমাদের বুঝান।
আমি বললাম, স্বাগতম! বসেন, এখনই আলাপ করি।
ভাই বললেন, না, আরো অনেকেই যেহেতু মাসুদের ব্যাখ্যা শুনতে চায়, একটা ডেট ফিক্স করো, সবাই আসুক।
বুধবার সিএসই ডিপার্টমেন্ট ৩ ঘন্টা ক্লাস অফ থাকে, টিচার্স মিটিং চলে। দিনক্ষণ ঠিক হলো। অন্যান্য ডিপার্টমেন্টের ছাত্ররাও আসলো। আমরা কোরআন হাদীসভিত্তিক 'শিয়া সুন্নি ডিসকাশান' করে ফেললাম।
ঘটনা ঘটে যাবার পরে স্যারেরা জানতে পারলেন। কে জানে, হয়ত শিবিরের স্ট্রং গোয়েন্দা নেটওয়ার্ক বিষয়টার গভীরতা আগেভাগে বুঝে উঠতে পারেনি 😅
(হয়ত এখন যারা লেখাটা পড়বেন, ভাববেন, "ওহাবীদের ডেরায় বসে শিয়া মাজহাবের প্রচার! বাপরে!" কিন্তু আমরা কেউ কাউকে ঘৃণা করতাম না এবং হেদায়েতের ব্যাপারে সবাই সবাইকে ভালোবাসতাম। আমাদের মাঝে এই প্র্যাকটিকাল সংস্কৃতিটা ছিলো।)
যাহোক, স্যারের জানতে পারলেন, এবং তুলকালাম ঘটে গেলো। জামায়াতের উপরমহলে রিপোর্ট চলে গেলো। এবং পরবর্তী বছরগুলোতে জামায়াতে ইসলাম প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ফ্যাসিবাদী আচরণ করলো আমার সাথে।
.
তাই বলে কি তাদেরকে ঘৃণা করব এখন আমি? আমার হৃদয়টা কি এতটাই ছাদ-দেয়াল-বিহীন রাস্তার জিনিস যে, যেকেউ সেখানে এসে একটা আচরণ করবে আর ঘৃণর জন্ম দিয়ে যাবে? যেখানে আমি জানি যে, এসব অন্যায় আচরণ অজ্ঞতা-প্রসূত, নানান আত্মিক রোগ থেকে উৎসরিত। এবং যেখানে আমি এ-ও দেখতে পাই যে, সমাজে এসব আত্মিক রোগের চিকিৎসার ব্যবস্থা নাই, অথচ রোগীদের উপর দোষারোপ হরদম চলে।
.
যখন আপনি আত্মার রোগ দেখার চশমাটা পরে নেবেন, তখন রোগী আর চিকিৎসক - এর বাইরে ভিন্ন কিছু দেখবেন না। ডাক্তারেরা ঠিকই জানে হসপিটালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা কেউ আওয়ামী লীগ, কেউবা বিএনপি, কেউ জামাত কিংবা নাস্তিক; কিন্তু তার দায়িত্ব রোগের চিকিৎসা। আমাদের সমাজে কোনো মুসলমান কি দুনিয়াবাসীর দিকে ঐভাবে তাকায় আদৌ? আত্মার রোগী আর চিকিৎসক - এই দুই ভাগে বিভক্ত করে?
.
আমি অপরের বেঁধে দেয়া ছক-কাঠামো-চশমায় আমার অবস্থান ব্যাখ্যা করব না। আমার হৃদয়কে আমারই হেফাজত করতে হবে।
সুফি ভাইয়েরা জানতে চেয়েছেন, আমি জামাত সাপোর্ট করি কিনা? #৪/৬
.
ছবিতে যার ইন্টারভিউ নেয়া হচ্ছে, তিনি মরহম মওলানা আবদুস সুবহান। জামায়াতের নায়েবে আমীর ছিলেন, পাবনা-৫ আসন থেকে পাঁচবারের নির্যাচিত সংসদ সদস্য। তিনি আমার নানা। আমার মা উনার বড় সন্তান। আপনারা অনেকে হয়ত এই পরিচয় জেনে থাকবেন। এখন ভাবতেই পারেন, তাহলে আমি নিশ্চয়ই জামাত সমর্থন করি। কিন্তু না। নানাজী কখনো আমাদের ভাইবোনদেরকে শিবির/ ছাত্রী সংস্থা করতে বলেননি। বরং নানাজী আমার আব্বুর কথা এভাবে বলতেন যে, "ও ছেলেমেয়েদের ঠিকভাবেই গড়ে তুলবে।" অতএব, আমার কখনো শিবির করা হয়নি।
আর ছবিতে ইন্টারভিউ যিনি নিচ্ছেন, তিনি আমার বাবা, নূর হোসেন মজিদী। ফেইসবুকে তার লেখাও হয়ত আপনারা পড়ে থাকবেন। বাংলাদেশের ইসলামপন্থী রাজনীতির ইতিহাস যারা পড়েছেন, তারা এই দুইজন মানুষকেই চিনবেন। অথচ তারা কেউ-ই তাদের ধর্মীয়-রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আমার উপর চাপিয়ে দেননি। আমরা ভাইবোনেরা প্রচণ্ডরকম ব্যক্তিস্বাধীনতার সুযোগ পেয়ে বড় হয়েছি। পারিবারিক পরিবেশে যুক্তি, দর্শন, সাংবাদিকতা -- এসব পেয়েছি। পরে বড় হয়ে এসব শাস্ত্রের ফরমাল স্টাডি করতে গিয়ে দেখেছি, মৌলিক প্রায় সবই জানা। তারপর ধর্ম ও রাজনীতির দৃষ্টিভঙ্গি নিজের মত করে গড়ে নিয়েছি।
যেই 'আকিদা' নিয়ে আপনাদের প্রশ্ন, সেই আকিদার জায়গায় আমরা ভাইবোনেরা ভিন্ন ভিন্ন। একেকজনের নামাজ একেক রকম। শিয়া ভাইয়েরা আবার ভাবতে যেয়েন না যে, কেন মজিদী সাহেব সন্তানদেরকে 'শিয়া ব্রেইনওয়াশিং' দেয় নাই। কেন কেউ শিয়াদের মতন, কেউবা সুন্নিদের মতন?
সরলীকৃত চশমায় মওলানা আবদুস সুবহানকে ওহাবী/ জামাত, আর নূর হোসেন মজিদীকে ইরানপন্থী/ শিয়া -- এরকম বিবেচনা করেন অনেকেই, তা আমি জানি। অথচ আমি তাদের সন্তান হিসেবে প্রকৃত চিত্রটা আরো ভালোভাবে জানি। কিন্তু তাই বলে আমি তাদেরকে ডিফেন্ড করতে দৌড়ে বেড়াই না।
ফেইসবুকে হাবিজাবি লোকজন আব্বুকে নিয়ে মিথ্যাচার আর অপবাদমূলক লেখা লেখে। কী আসে যায় তাতে। আজকে ফেইসবুকের সবাই তা করলেও আমি ডিফেন্ড করতে ব্যস্ত হয়ে উঠব না। কেননা তাদের ধর্মীয় রাজনৈতিক যেসব অবস্থান আমার নিজস্ব বিচারে সঠিক, সেটা সঠিকই। গোটা বাংলাদেশের সকল মুসলমান বিপরীত মনে করলেও আমি বিন্দুমাত্র বিচলিত হবো না। আর আমার নিজস্ব বিচারে তাদের কোনো কিছু যদি ভুল মনে হয়, তবে সেগুলো ভুল-ই। 'আমার বাপ' কিংবা 'আমার নানা' বলে আমি ডিফেন্ড করতে যাবো না। এসব অপ্রয়োজনীয় কাজ। এসব কাজে আল্লাহকে পাওয়া যায় না। মানুষকে আল্লাহমুখী করাও যায় না।
জামায়াতে ইসলাম কি মাওলানা আবদুস সুবহানের উপরেও জুলুম করেনি? পার্লামেন্ট ভবনের ভিতরের তুচ্ছ নিকৃষ্ট আচরণ থেকে শুরু করে জামায়াতের ভিতর মহলে নেগেটিভ মার্কেটিং কি করেনি? আমি যখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি, আমার এক বন্ধু যখন নানাজীর পরিচয় জানলো, সে তার মাকে জানালো, তার মা মহিলা জামাত করেন -- তিনি বললেন, "উনার সম্পর্কে শুনেছি, উনি একটু অন্যরকম।" এই অন্যরকমটা কেমন? সেটা হলো, দেশের সকল ইসলামী দলকে একত্রিত করে যখন আইডিএল গঠন করা হয়েছিলো, সেটাতে মওলানা আবদুস সুবহান শেষ পর্যন্ত লেগে থাকার চেষ্টা করেছিলেন। সেই ঐক্য প্রচেষ্টা ভেঙে দেয়া জামায়াতে ইসলাম। আমার নানা কেন 'দলকানা' ছিলো না, সেটাই জামায়াতের অনেকের চোখে তার অপরাধ। দেশের সকল মুসলমানের সেই ঐক্য প্রচেষ্টায় আমার বাবাও ছিলেন। আপনারা অনেকেই আইডিএল এর ইতিহাস জানেন। এ বিষয়ে আব্বু বই-ও লিখেছেন।
কিংবা আমার বাবাকে 'ধর্মত্যাগী' বলে মার্কেটিং করা -- এসব কাজ কি জামায়াত করেনি? তো কী আসে যায় তাতে! যদি কেউ খোদাতায়াল কাছে মকবুল হয়, তবে দুনিয়ার অপমানে কীবা আসে যায়! আর যদি কেউ খোদার কাছে সম্মানিত না হয়, তার দুনিয়াবী সম্মানে কিবা আসে যায়?
যে ক্ষমা করে, সে মহৎ হয়। আর এটা পুরোটাই প্র্যাকটিকালি চর্চার একটি বিষয়। উদারতা, ক্ষমা, ঐক্য - এগুলো নিতান্তই প্র্যাকটিকাল বিষয়, মুখে দাবী করার কিছু নয়। শিয়া-সুন্নি ওহাবী সালাফি আহলে হাদীস সুফি -- এত বিভক্তির মাঝে আপনারা এই গুণগুলোর প্র্যাকটিকাল চর্চা করতেছেন তো? আপনার চারিদিকের মহব্বতের মানুষদের ভিতরে এই সব রকমের মানুষ আছে তো? না থাকলে হায় আফসোস, এসব গুণ কেবল আপনার মুখ আর ফেইসবুক পোস্টেই রয়ে গেলো! আর অন্তরে রইলো আল্লাহর বান্দার প্রতি ঘৃণা আর বিদ্বেষ। ঐ অন্তর কিভাবে খোদাতায়ালার বাসগৃহ হবে?
.
ছবিটা ইরানের রাজধানী তেহরানে, যখন আব্বু আম্মু সেখানে সাংবাদিক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আর নানাজী কোনো এক রাষ্ট্রীয় সফরে গিয়েছিলেন সেখানে।
.
তবুও আকিদার প্রশ্নই হয়ত আপনাদের মনে নাড়া দিচ্ছে। পরের পোস্টে সেসব বলছি।
সুফি ভাইয়েরা জানতে চেয়েছেন, আমি জামাত সাপোর্ট করি কিনা? #৫/৬
.
২০২০ সালে নানাজী মাজলুম অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। ঢাকা মেডিকেলের ফ্লোরে ফেলে রাখা হয়েছিলো তাঁকে। চারিদিকে পুলিশ, আমরা কাছে যেতে পারতাম না। ২০১৫ সালে মিথ্যা যুদ্ধাপরাধ মামলায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলো হাসিনা, ৫ বছর কনডেম সেলে থেকে তারপর বলা যায় চিকিৎসা না দিয়েই তাঁকে মেরে ফেলা হয়। ছবিটা নানাজীর জানাজার একাংশ, নানাজীরই এক প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গনে।
জানাজা শেষে নানাজীর বাড়িতে ফিরলাম। শরীর অসম্ভব ক্লান্ত। এর মাঝে মেসেজে কিছু পোস্ট লিঙ্ক রিসিভ করলাম। স্বাভাবিক, জাতীয় পত্র-পত্রিকা মিডিয়াতে নিউজ হয়েছে, আর ফেইসবুকে 'জামাতিরা' লিখতেছে, "কিন্তু উনার নাতি তো শিয়া।"
প্রিয় ভাইয়েরা! এত মহব্বতের নানাজানকে কবরে শুইয়ে এসে যখন মূর্খদের এসব মন্তব্য দেখবেন, তখন হৃদয়ে ঘৃণার চাষ হয়ে যাওয়াটা মুহুর্তের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু আমার হৃদয়কে তো আমারই হেফাজত করতে হবে। আমি কেবল লিখলাম: "নানার ধর্ম নাতি পেতে পারে, বাপের ধর্ম পায় ছেলে, কিন্তু বিপরীতে গিয়ে নাতির ধর্ম নানা পেয়েছে - এমনটা কখনো শুনিনি।"
এইযে দলবাজি করা জাহেল লোকজন, আমি কি এখন তাদের সবাইকে ঘৃণা করা শুরু করব? মনে মনে বলব যে, "ঠিক হয়েছে হাসিনা তোদের গণহারে মেরেছে।" কিংবা তাদের ধ্বংস কামনা করব? না, প্রিয় ভাইয়েরা। আমার রাহবার আমার হৃদয়ের জন্য ভিন্ন আদেশ করেছেন।
তারপর গত অগাস্টে সাইদী সাহেব ইন্তেকাল করলেন। আমি ফেইসবুকে লিখলাম, "হায় মাজলুম!" ব্যস, আমার সুফি ভাইদের থেকেও শিয়া ভাইয়েরা ভয়ানকভাবে হামলে পড়লেন। সেসব কমেন্টও আমার খুব মনে আছে। কেবল সুফি মাহফুজ ভাই সুন্দরভাবে জানতে চেয়েছিলেন, আমার অবজার্ভেশনটা কী? তখন লেখার সুযোগ পাইনি, এখনও খুব একটা যে পাচ্ছি, তা নয়।
তো এইযে দলবাজি করা রোগগ্রস্ত লোকজন, তাদের জন্য কি আমি এখন আহলে বাইতের ইসলাম ছেড়ে দিবো? পাক পাঞ্জাতনকে ছেড়ে দিবো? না, ভাইয়েরা, আপনার হৃদয়ের হেফাজত আপনাকে করতেই হবে। কোনো অ্যান্টি ইজম দ্বারা তাড়িত হবেন না। রোগগ্রস্ত হৃদয়ে "তাওয়াল্লা ওয়া তাবাররা" এর চর্চা করবেন না, রোগ বৃদ্ধিই পাবে কেবল, কমবে না। হৃদয়ের শুদ্ধি-সংস্কার হেফাজতের দিকে নজর করুন।
.
আমি শিয়া নাকি সুন্নি সুফি? আর সুফিদের কিভাবে খেদমত করতে চাই? শিয়া সঠিক নাকি সুন্নি সঠিক? সেকথায় আমার ১টা উত্তর দিচ্ছি এর পরের পোস্টে।
সুফি ভাইয়েরা জানতে চেয়েছেন, আমি জামাত সাপোর্ট করি কিনা? #৬/৬
.
দেখেন, শিয়া সঠিক নাকি সুন্নি সঠিক, সে বিষয়ে উত্তর দুইভাবে দেয়া যায়: ১. আরো বিভক্তির আশঙ্কা সহকারে, ২. ঐক্যের আশা সহকারে।
আমি অবশ্যই দ্বিতীয় অ্যাপ্রোচে বলব। সেটাই আমার রাহবারের আদেশ।
মনোযোগ দিয়ে নিচের থিওরিটা পড়তে অনুরোধ করছি।
সিভিলাইজেশন:
মানুষের ব্যক্তিজীবন থাকে, আর থাকে সামাজিক জীবন। সৃষ্টির শুরু থেকেই এমন। ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনের নানান কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মানুষ অর্জন করে সিবগাতুল্লাহ বা আল্লাহর রং (ঐশী গুণাবলী)।
মানুষ ক্রিয়েটিভ প্রাণী। ইতিহাসে মানুষের নানারকম সমাজব্যবস্থা এসেছে, আবার বিলুপ্তও হয়েছে। সিভিলাইজেশন evolve করে। দেখা যায়, সমাজব্যবস্থা পরিবর্তনের সাথে সাথে সিবগাতুল্লাহ ধারণ করার জন্য ভিন্ন ভিন্ন কাজ করার প্রয়োজন হয়।
নবুওয়্যাত:
এইজন্য আল্লাহ তায়ালা নবী প্রেরণ করেন। নবীর কাজ হলো, পরিবর্তিত সমাজব্যবস্থার জন্য ভিন্ন ভিন্ন নিয়ম (শরীয়া) দেয়া। সেটা সমাজে বাস্তবায়ন করতে সাহায্য করা। সমাজের নানান সমস্যার সমাধান সরাসরি খোদাতায়ালার কাছ থেকে নিয়ে আসা। আমরা বলতে পারি, নবী হলেন real time God-communicator. এভাবে একজন নবীর দেয়া আদেশ-নিষেধ মেনে চলে একটা সমাজের মানুষদের ভিতরে ঐশী গুণাবলী বিকশিত হয়। তারা আল্লাহমুখী হয়।
রিসালাত:
কিন্তু নবী মারা গেলে কী হবে? তিনি ঐশী বিধান রেখে যান। সেই বিধান মেনে সমাজ চলতে থাকে, গুণের বিকাশ ঘটে, মানুষ খোদামুখী হয়। কিন্তু ঐযে - ক্রিয়েটিভ প্রাণী মানুষ, তার সিভিলাইজেশন-ও ever evolving. তাই সেই কিতাবও একসময় অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়তেছে। ঐ কিতাবের আদেশ-নিষেধ চর্চা করে আর সিবগাতুল্লাহ পূর্ণরূপে বিকশিত হতে পারতেছে না। তখন আরেকজন নবী আসেন। পূর্বের বিধানকে রহিত করেন। নতুন বিধান দেন। এইভাবে চলে। কিন্তু কোনো কোনো নবী বিধান রেখে যান। কেউ রেখে যান না। এটা কেন?
নবী/ রাসুল:
কারণটা evolving civilization. যে সিভিলাইজেশন কয়েক শত বা হাজার বছর টেকার সম্ভাবনা থাকে, অর্থাৎ একই 'set of শরীয়ত' চর্চা করলেই তারা আল্লাহকে পাবে, নিজেদের গুণাবলীর পূর্ণ বিকাশ ঘটাতে পারবে -- সেই সিভিলাইজেশনের জন্য বিধান রেখে যেতে হয়। আর fast evolving সিভিলাইজেশনগুলোর জন্য real-time God-communicator অর্থাৎ নবী দরকার হয়। একারণে যত নবী এসেছেন, তাদের সবাই রিসালাতের কাজ করেননি (কিতাব রেখে যাননি)। যে সিভিলাইজেশানগুলোর দীর্ঘায়ু হবার চান্স থাকবে, সেগুলোর জন্য রেখে গেছেন।
(এখানে একেকটা সিভিলাইজেশানকে আলাদা করা হচ্ছে ঐশী শরীয়তের ভিত্তিতে: একটা set of rules মেনে চললে কতদিন পর্যন্ত তাদের সমাজব্যবস্থায় সেটা ঐশী গুণাবলীর বিকাশ লাভের জন্য প্রাসঙ্গিক / কার্যকরী থাকে।)
বেলায়েত/ ইমামত:
তো এইযে সকল নবীই বিধান নিয়ে আসেন। যেসব নিয়ম-কানুন মেনে ব্যক্তি ও সামাজিক জীবন পরিচালনা করলে মানুষ আল্লাহামুখী হতে পারে, সিবগাতুল্লাহ (আল্লাহর রঙ) ধারণ করতে পারে। নবী নিজেও সেগুলো মেনে চলেন। সামাজিক জীবনে নেতৃত্বের দরকার হয়, সেটাও তিনি করেন। অর্থাৎ, "বিধানের বাস্তবায়নকারী"।
তো দেখেন, নবী যখন ঐশী বিধান বাস্তবায়ন করেন, তখন তাতে ত্রুটি নাই। আবার তিনি যখন রাসুল হন, মানে একটা কিতাব নিয়ে আসেন, সেটাও কিন্তু তিনিই বাস্তবায়ন করেন। বিধানের ১০০% জ্ঞান তার ভিতরে আছে। তিনি সেটার উপর আমলও করেন, ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে (আর এটাই হলো সমাজে 'ইসলাম প্রতিষ্ঠা', যা নিয়ে এত বিতর্ক)। কিন্তু তিনি মারা গেলে কী হবে?
শিয়া-সুন্নি গণ্ডগোল:
এই জায়গায় এসে শিয়া সুন্নি গণ্ডগোল বেঁধে গেছে। আজকে ইতিহাসে যাবো না, থিওরিতেই থাকেন। ভেবে দেখেনতো, আল্লাহ বিধান দিবেন, অথচ বিধানের বাস্তবায়নকারী দিবেন না -- কেন? বলতে পারেন যে হ্যাঁ, আমরাই বাস্তবায়নকারী। কিন্তু ভাই, আমাদের কারো তো কোরানের ১০০% জ্ঞানা নাই। আজ পর্যন্ত নবীর (সা.) পরে পৃথিবীর কোন মানুষটা দাবী করতে পারবে যে, সে কোরআন ১০০% জানে? আর যদি দাবী করেও, আপনার সেই মুর্শিদের উপর আমি কিভাবে ভরসা রাখব? কিংবা আমার পীরের উপর আপনি কিভাবে ভরসা রাখবেন? অতএব আমাদের বিভক্তি হবেই। এটা inevitable. যতই আপনার আকিদা সঠিক হোক (আপনার চোখে), আর আমার আকিদা সঠিক হোক (আমার চোখে)।
শিয়া-সুন্নি হৃদয়ের চাওয়া একই:
দেখেন, শিয়া-সুন্নি সকল মুসলমানই চায়, কোরআনের আইন অনুযায়ী সমাজ চলুক। কোরানের জ্ঞান তো এজিদেরও ছিলো (১-২%), কিংবা হাসিনারও ছিলো (০-১%)। কিন্তু মুসলমানেরা সবাই-ই চায়, সমাজের কোরানের বিধান বাস্তবায়নকারী লোকটার কোরানের জ্ঞান থাকুক। ১-২% না, ১০০% হলে সবচে ভালো হয়।
শিয়াদের যুক্তি:
আর এইখানে এসেই শিয়ারা বলে, বিধান দিয়েছেন যিনি, বিধানের বাস্তবায়নকারীও তিনিই দিবেন। "বিধানটা থাকবে কেয়ামত পর্যন্ত, অথচ তার সাথে সাথে একটা লোক জুড়ে দিবো না যে বিধানটা পুরাপুরি জানে বুঝে" -- এইটা হতেই পারে না।
আর কিভাবে আমরা বুঝব, কার কোরানের ১০০% জ্ঞান আছে? পৃথিবীর সব পীর/ ওলি/ আউলিয়া/ মুফাসসিরে কুরআন/ আল্লামা/ শায়খের এক্সাম নেবো? তারপর যে পাশ করবে, তাকে ডিক্লেয়ার করব? কিন্তু প্রশ্ন তৈরি করবে কে? খাতা দেখবে কে? সেই শিক্ষকেরই যে ১০০% জ্ঞান আছে, সেটার গ্যারান্টি কই পাবো?
এইজন্য শিয়ারা বলে যে, এরকম এক্সাম নিতে হলে সেটা নবীজি (সা.)-এরই নিতে হবে, কাারণ তাঁর আছে কোরানের ১০০% জ্ঞান। তারপর সাহাবীদের মধ্যে কে কে ১০০% মার্কস পেয়ে পাশ করেছেন, সেটাও তাঁরই বলতে হবে ("আমি জ্ঞানের নগরী, আলী তার দরজা")। অথবা এক্সাম না নিলেও সরাসরি ডিক্লেয়ার করে দিতে হবে যে "ওমুক হবে আমার পরে তোমাদের জন্য 'বিধানের বাস্তবায়নকারী' নেতা।" ("আমি যার মাওলা, আলী তার মাওলা।")
কোরান তো অনন্তকালের। সেই আলীর ইন্তেকাল হলে তারপর বিধান বাস্তবায়নকারী কে হবে? এমন কেউ, যার আছে কোরানের ১০০% জ্ঞান? শুধু জ্ঞান থাকলেই হবে না, পুরাপুরি আমলও করতে হবে কোরানের উপর। আলীর ইন্তেকালের আগে সেটা আলীকেই বলে যেতে হবে। সেটা আলী সবার এক্সাম নিক, অথবা সরাসরি ডিক্লেয়ার করুক। তারপর নেক্সট ইমাম, তারপর নেক্সট...। এইভাবে চলবে।
সুন্নিদের যুক্তি:
সুন্নি ভাইদের এই ক্ষেত্রে অকাট্য, ডিডাকটিভ কোনো রিজনিং নাই। কিন্তু সমাজের নেতৃত্ব কোরানের জ্ঞানঅলা মানুষের হাতে থাকুক, এটাতো তারাও চায়। ১-২% না, কোরানের ১০০% জ্ঞানঅলা আমল-করা মানুষ হলে বেস্ট।
আমাদের হৃদয়গুলোর চাওয়া তো একই। গন্তব্যস্থল একই। তবে কিসে আমাদেরকে বিভক্ত করে রেখেছে?
প্রশ্ন করতে পারেন, বর্তমান ইমাম তাহলে কই? হ্যাঁ, তাকে সামনাসামনি না পেলে ব্যাকআপ প্ল্যানটা কেমন হতে পারে -- সেগুলো সবাই মিলে আলোচনা করার বিষয়। শিয়া/ সুন্নি/ সুফি/ ওহাবী/ সালাফি/ আহলে হাদীস ইগো ধরে বসে থাকার বিষয় নয়।
হৃদয়ের চাওয়া আর ইমামের অনুপস্থিতিতে অসহায়ত্বের জায়গায় আমি নিজেকে সুন্নি ভাইদের থেকে ভিন্ন কোনো জায়গায় দেখি না।
.
সুফি ভাইয়েরা বেলায়েত কনসেপ্ট নিয়ে আরো আলাপ করতে পারেন। কিভাবে আমি সুফিদের খেদমত করতে চাই, মজলিস ডাকলে সেখানেই প্রস্তাবনা তুলে ধরব, ইনশাআল্লাহ তায়ালা।
.
ওয়াসসালামু আলা ইবাদিল্লাহিস সলিহিন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
[ব্লগে কমেন্ট পোস্ট করার পরও যদি না দেখায়, তাহলে দ্বিতীয়বার পোস্ট করার প্রয়োজন নেই। খুব সম্ভবত স্প্যাম গার্ড সেটাকে সরিয়ে নিয়েছে, আমি পাবলিশ করে দেবো।]