সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মেসেজ : সাম্প্রতিক বিভিন্ন ইস্যুতে আমার অবস্থান

বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশীরা বহুভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। মুসলিম ছাড়া আর কোনো লেবেল নিজের গায়ে লাগাতে না চাইলেও ট্যাগিং অস্ত্রের শিকার হয়ে পড়েছি। দুঃখজনকভাবে সেটা "রহিম-করিমদের" কাছ থেকেই। একারণে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করা কর্তব্য।

যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাহরির স্কয়ারের মত ইসলামী বিপ্লবের আলো দেখা যাচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশের মত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে ইসলামের কবর রচনা করার প্রকাশ্য ঘোষণা হচ্ছে। আমরা যে মুসলিম বিশ্ব ও বৈশ্বিক ইসলামী জাগরণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে উল্টো পথে চলছি, তা আশঙ্কাজনকভাবে সত্য।

সাম্প্রতিককালে ঢাকার শাহবাগে যে মুভমেন্টটা শুরু হয়েছে, তাকে কোনোভাবেই উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। ইসলামপন্থীরা একে বরাবরের মত একটি "ব্যর্থ সরকারী প্রচেষ্টা" মনে করলে ভুল করবেন। এটা সত্য যে পাঁচদিন ধরে সমস্ত মিডিয়ায় ঢাক-ঢোল পিটিয়েও তারা ৫০ হাজার লোক আনতে পারে নাই। কিন্তু এ-ও সত্য যে ইসলামবিরোধী সকল শক্তি এখানে একত্রিত হয়ে একটি প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে কার্যতঃ ইসলামকে ধ্বংসের ঘোষণা দিয়েছে। এই "নতুন মুক্তিযুদ্ধের" মাধ্যমে দীর্ঘদিনের বপন করে আসা ঘৃণার বীজের অঙ্কুরোদগম ঘটানো হলো। অতঃপর গৃহযুদ্ধের দামামা। এবং এই যুদ্ধ হবে সংখ্যালঘু হয়ে পড়া প্রকৃত মুসলিম এবং আর সব "রহিম-করিমদের" মাঝে। মুসলিম বিশ্ব খুব দ্রুতই এই ভূখণ্ডে মুসলিমের রক্তবন্যা দেখতে যাচ্ছে বলে আশঙ্কা করছি। এবং সেটা যখন "রহিম-করিমদের" হাতে হয়, তখন ইসলাম-পরিস্থিতি কোন অমানিশায় পতিত হয়েছে, তা চিন্তা করে শঙ্কিত হই।
এখানে যারা অংশ নিয়েছে তাদের একটা উল্লেখযোগ্য অংশ তরুণ ছেলেপেলে, যারা বুঝতেও পারছে না ইসলাম বিরোধী কত বড় চক্রান্তের ক্রীড়নক হিসেবে তাদেরকে ব্যবহার করা হচ্ছে। ছানি-পড়া চোখে তারা দেখছে গুটিকয়েক "জঘন্য অপরাধীর" ফাঁসির দাবী। অবশ্য তাদেরকে এভাবে ব্যবহার করার জন্য বছরের পর বছর ধরে মিডিয়া ব্যবহার করে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী করে ফেলা হয়েছে। সুতরাং, তারা শুনতে ও দেখতে পায় না।

অপর গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হলো "যুদ্ধাপরাধ"। গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন ইসলামী ব্যক্তিত্বকে হত্যা করার জন্য দেশের বাইরে থেকে আসা নির্দেশ ও টাকায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নাটক শুরু হয়েছে। দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় গত ডিসেম্বরের নয় তারিখ থেকে পাঁচদিন ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত স্কাইপ সংলাপ এবং অতঃপর ইন্টারনেটে প্রাপ্ত সম্পূর্ণ কথোপকথন এই বিচার নাটককে সম্পূর্ণই নগ্ন করে ফেলেছে। এটা বাংলাদেশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ সময় ছিলো। বাংলাদেশের মানুষকে "সত্যপন্থী", "দ্বিধাগ্রস্ত", "মুনাফিক" ও "কাফির" -- এই কয়েকটি ভাগে ভাগ করলে মুনাফিক ও কাফিরদের জন্য সম্পূর্ণ নির্লজ্জ হয়ে অন্ধের ন্যায় আচরণ করা ছাড়া আর পথ থাকলো না। আর দ্বিধাগ্রস্তদেরও ভাগ হয়ে গিয়ে যেকোনো পক্ষ অবলম্বন করতে হলো। কারণ "রাজার পোষাক" নিয়ে শিশুর মন্তব্যের পর আর যা-ই হোক, দ্বিধাগ্রস্ত থাকার কোনো সুযোগ থাকে না। সত্যপন্থীদের আরেকটু সূক্ষ্মভাবে লক্ষ্য করলে দেখবেন কেউ কেউ এই গ্রাউন্ড থেকে বিরোধিতা করছে যে বিচার নিরপেক্ষ নয়, বিচাপ্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ। সন্দেহ নেই, তারা এটা করছেন গা বাঁচানোর জন্যে। অথচ সত্যপন্থী সকলের এই বক্তব্যে অনড় হওয়া উচিত ছিলো যে, "এদেশে ইসলাম ধ্বংসের নীলনকশার অংশ হিসেবে বানোয়াট অভিযোগে কিছু ইসলামী ব্যক্তিত্বকে নিশ্চিহ্ণ করতে জুডিশিয়াল কিলিং এর আয়োজন করা হয়েছে।"
অপরদিকে সেই একই দিনে, ডিসেম্বরের নয় তারিখে প্রকাশ্য রাজপথে বিশ্বজিতকে কুপিয়ে হত্যা করা হলো, এবং হত্যাকারী ছাত্রলীগারদের রক্ষা করার জন্য সরকারের নির্লজ্জ বেহায়াপনা মানুষ দেখলো। এরপরও কিছু মানুষ আওয়ামী সমর্থক রয়েই গেলো, যেমনটি হয়েছিলো ২৮শে অক্টোবর, ২০০৬ এর লগি-বৈঠা বর্বরতার পরও। (একই দিনে জামায়াত কর্মী ওয়ারেস আলীকে একইভাবে হত্যার নিউজটি মিডিয়া গুম করে দিলো এবং --) প্রথম আলো, বাংলানিউজ২৪.কম, বিডিনিউজ২৪.কম ইত্যাদি পত্রিকা ও সময়, ইন্ডিপেন্ডেন্ট, '৭১ ইত্যাদি টিভির নির্লজ্জ মিথ্যাবাদীতা আরো বেড়ে গেলো। সুতরাং মানুষ যেকোনো একটি পক্ষাবলম্বন করতে বাধ্য হলো -- বিভাজন আরো সুস্পষ্ট হলো; যেভাবে বিভাজন সুস্পষ্ট হয়েছে শাহবাগ ইস্যুতে, ২৮শে অক্টোবর ইস্যুতে এবং স্কাইপ-সংলাপ ইস্যুতে।

যে ইস্যুতেই হোক না কেনো, বিভাজনগুলো মূলত সত্যপন্থী এবং মুনাফিক ও কাফিরদের আলাদা করে দিচ্ছে, আর দ্বিধাগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা কমছে। সুতরাং মহানবী (সা.) কে নিয়ে কটুক্তিকারীর বিরুদ্ধে আর কেউ "শাহবাগ স্কয়ার" বানানোর চেষ্টা করবে না, গুটিকয়েক সংখ্যালঘু হয়ে পড়া প্রকৃত মুসলমানের ক্ষুদ্র মিছিল ছাড়া। সে-ও পুলিশের গুলি ও লাঠিচার্জে পথেই মারা যাবে।

অতি সাম্প্রতিক সময়ে জামায়াত-শিবির কর্মীদের উপর পুলিশি বর্বরতা অতীতের যেকোনো সময়কে হার মানিয়েছে। মসজিদে ঢুকে নামাজরতদের গ্রেফতার করা, গায়ে পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করা, মাথায় গুলি করে হত্যা করা, জীবন্ত ছেলেকে ধরে নিয়ে গিয়ে হত্যা করে চোখ উপড়ে লাশ উদ্ধারের নাটক করা ইত্যাদি যুক্ত হয়েছে ছাত্রলীগের বর্বরতার সাথে। ছাত্রলীগ ও পুলিশ উভয়ে একত্রে এই হত্যাযজ্ঞ চালাচ্ছে। '৫২র ২১শে ফেব্রুয়ারিতে পুলিশের গুলিতে পাঁচজন শহীদ হলে তা ইতিহাসে স্থান নিলো, কিন্তু এখন পুলিশের গুলিতে প্রতিদিন ৪-৫ জন মারা গেলেও তা ইতিহাস হয় না। ইতিহাস না হোক ক্ষতি নেই, কিন্তু গভীর শঙ্কার বিষয় এই যে এই হত্যাযজ্ঞের বিরোধিতা না করা এবং এতে উল্লাস প্রকাশ করা মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার অর্থই হচ্ছে সামগ্রিকভাবে আমরা বিবেকহীন জাতিতে পরিণত হয়েছি। সেকারণেই বর্তমান বাংলাদেশের সাথে গোত্রে গোত্রে যুদ্ধের সেই জাহেলী যুগের আরবের কোনো পার্থক্য দেখি না; এবং আমরা আরও ঘোর অন্ধকারের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। আল্লাহই ভালো জানেন এই জাতির ভাগ্যে কী আছে !

আইডেন্টিটি বর্তমান সময়ে একটি ভয়ানক ইস্যু। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সারাবিশ্বের মুসলমানেরা নিজেদেরকে মুসলিম পরিচয় না দিয়ে শিয়া-সুন্নি-ওহাবী-কাদিয়ানী ইত্যাদি পরিচয় দিচ্ছে এবং points of unity এর পরিবর্তে points of division খুঁজে নিজেদের দুর্বল করে ফেলছে। ধর্মীয় পরিচয় "মুসলিম" এর পরিবর্তে প্রাধান্য পাচ্ছে অন্যান্য পরিচয় (যেমন এদেশে "বাঙালি", "বাংলাদেশী" কিংবা "মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি" পরিচয়)। "এক আল্লাহ ও তাঁর রাসূলে বিশ্বাসী মুসলমানেরা ভাই-ভাই" এই নীতির ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ না হয়ে নানান ইস্যুতে নিজেদের বিভক্ত করে ফেলছে। আর তাই এক মুসলিমের হাতে অন্য মুসলিমের রক্ত, কারণ তারা ধর্মীয় পরিচয় ভুলতে বসেছে। আমাদের দেশের জন্যও কথাগুলো সমান প্রযোজ্য।
ইসলামপন্থী সকল মুসলমানের উদ্দেশ্যে বলছি, এক আল্লাহ, তাঁর রাসূল ও কোরআনের ভিত্তিতে একত্রিত হোন। আমাদের বিভক্তির অনেক ইস্যু থাকতে পারে। কিন্তু ইসলাম বিরোধীরা আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে কেবল ঐ আল্লাহ-রাসূল-কোরআন ইস্যুতে। সুতরাং তাদের মোকাবিলায় আমাদেরও একই ভিত্তিতে একত্রিত হতে হবে। আল্লাহ আরব-অনারব কিংবা বাঙালি-অবাঙালি পার্থক্য করেন নাই, বরং বলেছেন মুমিনরা এক জাতি। কাফির ও মুনাফিকদের পরিত্যাগ করে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হওয়া খুবই জরুরি। আমাদের প্রতিশ্রুত বিজয় হয়তো খুব কাছেই, কিন্তু আমরা তা উপলব্ধি করছি না। বহির্বিশ্ব যে ইসলামী জাগরণ ও একতা দেখছে, তার সাথে শামিল হওয়া এখন আমাদের একান্ত প্রয়োজন।

বড় বড় চিন্তাবিদগণ অনেক বিশ্লেষণমূলক লেখা লিখে থাকেন। ইন্টারনেটের কল্যানে সেগুলো পড়ার সুযোগ হয়। তবে তাদের পারস্পেক্টিভ থেকে সরে এসে আমি যখন তরুণ সমাজের অংশ হিসেবে আমার পারস্পেক্টিভ থেকে সামগ্রিক পরিস্থিতির দিকে তাকাই, তখন অধঃপতিত তরুণদের দেখে আফসোসের শেষ থাকে না। একারণে আমার চিন্তার একটা বড় অংশ বর্তমান তরুণ সমাজের পর্যবেক্ষণের পিছনে ব্যয় হয়। তরুণ সমাজের মাঝে সত্যপন্থী চক্ষুষ্মানদের চিন্তার ভারে বয়স বেড়ে গিয়েছে; তাদেরকে বাদ দিয়ে চিন্তা করলে বাকিটুকু দ্বিধান্বিত, কাফির ও মুনাফিকে বিভক্ত, এবং দুঃখজনকভাবে এরাই তরুণ সমাজের বড় অংশ।

তোমরা যারা শয়তানের পথ অনুসরণ করছো, তোমাদের বিবেককে কি একেবারেই খুইয়ে ফেলেছো ? বায়োস্কোপের অতিরঞ্জিত আবেগ তোমাদের মাঝে শিহরণ আনে, কিন্তু কেনো চোখের সামনে ঘটে যাওয়া আবিদের চোখ উৎপাটন তোমাদের হৃদয়ে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে না ? তোমাদের কী হয়েছে ? তোমাদের কেউ কেউ অত্যন্ত নিবেদিতপ্রাণ হয়ে কাজ করছো, কিন্তু বুঝতে কি পারছো না যে তোমরা ইসলামের বিরুদ্ধে জেনে-না জেনে কাজ করে যাচ্ছো ?
তোমরা যারা এমনটা করছো, আমি তোমাদের সতর্ক করছি : ইসলামের দুর্দিনে অবিশ্বাসীদের আপাতঃ বিজয় ও শক্তি দেখে মুনাফিক ও কাফিরদের দলে ভিড়ো না। ইসলামের প্রতিশ্রুত বিজয় আসবেই, এবং সেদিন দলে দলে মানুষ ইসলামে প্রবেশ করবে, এমনকি হয়তো তোমাদের কাফির বন্ধুরাও, কেবল তোমরা যারা মুনাফিক, তারা প্রত্যাখ্যাত হবে। আল্লাহ তো আমাদের অতি নিকটে, এমনকি যখন তুমি অপরাধ করো তখনও। যদি বিবেকের ন্যুনতম দংশনটুকু অবশিষ্ট থাকে, তবে সত্যপন্থী হয়ে যাও, নইলে হয়তো ভবিষ্যতে সতর্ক করার কেউ আর থাকবে না -- তোমাদের আনীত অনাচারে তারা শেষ হয়ে যাবে। হতে পারে এই তোমাদের কারো হাতেই আমার মৃত্যু হবে, কিন্তু সত্যের সাথে কোনো কিছুরই দর কষাকষি চলে না। আমি প্রবলভাবে আশা করতে পরি যে ইসলামের সেই প্রতিশ্রুত বিজয় সন্নিকটে, কেবল আমি দেখতে পাবো কিনা নিশ্চিত নই।

আর অনেকে আছো দ্বিধান্বিত। হয়তো সত্য কিংবা মিথ্যা -- কোনোটাই তোমাকে এসে নাড়া দিয়ে যায় নাই। আশঙ্কা করি যে আমি চুপ থাকলে শীঘ্রই হয়তো কাফির-মুনাফিকেরা তোমাকে নষ্টদের দলে নিয়ে যাবে। তোমাদের মত মানুষদের প্রতি দায়িত্ব থেকেই আমার এই মেসেজ। So :
No matter they come to kill you or not, someday you will have to die anyway. So don't let that fear stop you from telling the truth. Perhaps you will achieve great things someday. And if you die without ever fighting for the truth, it's probably gone in vain.


কোরআনের কিছু প্রাসঙ্গিক আয়াত দিয়ে লেখাটি শেষ করছি।

"হে ঈমানদারগণ ! তোমরা ন্যায়ের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকো, আল্লাহর ওয়াস্তে ন্যায়সঙ্গত সাক্ষ্য দান করো, তাতে তোমাদের নিজের বা পিতা-মাতার অথবা নিকটবর্তী আত্মীয়-স্বজনের যদি ক্ষতি হয়, তবুও। কেউ যদি ধনী কিংবা দরিদ্র হয়, তবে আল্লাহ তাদের শুভাকাঙ্খী তোমাদের চেয়ে বেশি। অতএব, তোমরা বিচার করতে গিয়ে রিপুর কামনা-বাসনার অনুসরণ কোরো না। আর যদি তোমরা ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে কথা বলো কিংবা পাশ কাটিয়ে যাও, তবে আল্লাহ তোমাদের যাবতীয় কাজ কর্ম সম্পর্কেই অবগত।" -- সূরা নিসা, ৪:১৩৫

"আর তোমাদের কী হলো যে, তোমরা আল্লাহর রাহে লড়াই করছো না দুর্বল সেই পুরুষ, নারী ও শিশুদের পক্ষে, যারা বলে, হে আমাদের পালনকর্তা ! আমাদিগকে এই জনপদ থেকে নিষ্কৃতি দান কর; এখানকার অধিবাসীরা যে অত্যাচারী ! আর তোমাদের পক্ষ থেকে আমাদের জন্য পক্ষাবলম্বনকারী নির্ধারণ করে দাও এবং তোমার পক্ষ থেকে আমাদের জন্য সাহায্যকারী নির্ধারণ করে দাও।" -- সূরা নিসা, ৪:৭৫

"হে ঈমানদারগণ ! তোমরা মুমিন ব্যতীত অন্য কাউকে অন্তরঙ্গরূপে গ্রহণ কোরো না; তারা তোমাদের অমঙ্গল সাধনে কোনো ত্রুটি করে না -- তোমরা কষ্টে থাকো, তাতেই তাদের আনন্দ। শত্রুতাপ্রসূত বিদ্বেষ তাদের মুখেই ফুটে বেরোয়। আর যা কিছু তাদের মনে লুকিয়ে রয়েছে, তা আরো অনেকগুণ বেশি জঘন্য। তোমাদের জন্যে নিদর্শন বিশদভাবে বর্ণনা করে দেয়া হলো, যদি তোমরা তা অনুধাবন করতে সমর্থ হও।" -- সূরা আল ইমরান, ৩:১১৮



নূরে আলম
ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৩।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

শিয়া-সুন্নি বিরোধ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ কিছু প্রশ্ন এবং উভয় পক্ষের জবাব

শিয়া-সুন্নি বিভেদ ও দ্বন্দ বহু পুরনো বিষয়। এই দ্বন্দ নিরসনে ইতিহাসে বহু দ্বীনি ব্যক্তিত্ব বৃহত্তর মুসলিম ঐক্য প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন। বিপ্লবের পরপর ডা. জাকির নায়েকের ওস্তাদ আহমদ দীদাত ইরানের যান এবং সেখান থেকে ফিরে এসে শিয়া-সুন্নি ঐক্য ডায়লগে তাঁর অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন, যা আমি এক সপ্তাহ আগে অনুবাদ করে প্রকাশ করেছিলাম । যা-ই হোক, এই দ্বন্দ নিশ্চিতভাবেই মুসলমানদের জন্য একটি নেতিবাচক ও দুর্বলতার দিক। এমনকি তা অনেককে চরমপন্থার দিকেও নিয়ে গিয়েছে। আগে যেই শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ আলেমসমাজ ও কতিপয় জানাশোনা ব্যক্তির মাঝে সীমাবদ্ধ ছিলো, বর্তমান সহজ তথ্যপ্রযুক্তির যুগে তা প্রায় সকল লেভেলে ছড়িয়ে পড়েছে। দেখা যাচ্ছে যে, একদল আরেক দলকে এমন অনেক অভিযোগ করছে, যেগুলো হয়তো শিয়া-সুন্নি উভয় আলেমই অগ্রহণযোগ্য বলে বাতিল করে দেবেন। তবে তথ্যের অবাধ প্রবাহের একটি সুবিধা হলো, এতে মিথ্যার প্রচার যেমন অতি সহজ, তেমনি একইভাবে মানুষের দ্বারে সত্যকে পৌঁছে দেওয়াও খুব সহজ। আমি ব্যক্তিগতভাবে শিয়া ও সুন্নি উভয়কেই মুসলিম ভাই বলে গণ্য করি। কিন্তু তাদের বৃহত্তর ঐক্যে পৌঁছানোর ব্যর্থতা, পরস্পর শত্রুতা ও প্রেজ

ইমাম খোমেনীর জীবন : এক ইসলামী বিপ্লবের ইতিহাস

রুহুল্লাহর গল্প ইমাম আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ আল মুসাভী আল খোমেনী। বিশ্ব ইমাম খোমেনীকে প্রথমবারের মত চিনেছে ১৯৭৮ সালের শেষাশেষি , যখন ইরানের রাজতন্ত্রের বিরোধিতা করার কারণে তিনি ফ্রান্সে নির্বাসিত ছিলেন। প্যারিসের অদূরে বসে ইরানের শাহ মুহাম্মদ রেজা পাহলভীর বিরুদ্ধে ইমাম খোমেনীর ঘোষিত যুদ্ধ এবং আমেরিকা বিরোধী কঠোর বক্তব্য এক অভূতপূর্ব মিডিয়া কাভারেজ এনে দিলো , এবং ইমামকে বিংশ শতকের অন্যতম বিপ্লবী চরিত্র হিসেবে পরিচিত করলো। পত্র - পত্রিকা আর নিউজ বুলেটিনে তাঁর ছবি ভরে উঠলো। এই ছবি বিশ্বের অসংখ্য মানুষের কাছে , বিশেষতঃ পশ্চিমা বিশ্বের কাছে নিতান্তই অপরিচিত ছিলো। সাদা দাড়ি এবং কালো পাগড়িধারী এই মানুষটিকে দেখে মনে হতো যেনো ইতিহাসের পাতা থেকে সময় অতিক্রম করে বর্তমানে চলে এসেছেন। তাঁর সমস্তকিছুই ছিলো নতুন আর অপরিচিত। এমনকি তাঁর নামটিও : রুহুল্লাহ। আর দুনিয়ার অসংখ্য পলিটিশিয়ান ও সাংবাদিকদের মনে যে প্রশ্নটি নাড়া দিয়ে যাচ্ছিলো , তা ছিলো : কী ধরণের বিপ্লবী মানুষ এই খোমেনী ?

শিয়া-সুন্নি ঐক্য ডায়লগ এবং আহমেদ দিদাতের ইরান অভিজ্ঞতা

(লেখাটি পিডিএফ আকারে ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন। ) আহমেদ দিদাত ( ১৯১৮ - ২০০৫ ) এর নাম হয়তো অনেকের অজানা থাকবে। তবে ডা . জাকির নায়েকের নাম নিশ্চয়ই অজানা নয়। ডা . জাকির নায়েকের বর্তমান কর্মকাণ্ডের অনুপ্রেরণা হলেন আহমেদ দিদাত। আহমেদ দিদাত , যিনি কিনা ডা . জাকির নায়েকের নাম দিয়েছিলেন " দিদাত প্লাস " – পৃথিবীজুড়ে ঘুরে বেড়ানো এবং তুলনামূলক ধর্মতত্ত্ব নিয়ে লেকচার দেয়া ছিলো তাঁর কাজ। যাহোক , ১৯৭৯ সালে ইমাম খোমেইনীর নেতৃত্বে ইসলামী বিপ্লবের মাধ্যমে ইরানে ২৫০০ বছরের রাজতন্ত্রের অবসান ঘটে এবং ইসলামী ইরানের জন্ম হয়। বিপ্লব - পরবর্তী ইরানে ভিজিট করেন আহমেদ দিদাত , সাক্ষাৎ করেন ইমাম খোমেইনীর সাথে এবং নিজদেশে ফিরে এসে ১৯৮২ সালের মার্চ মাসে তাঁর অনুভূতি তুলে ধরেন। আহমেদ দিদাতের নানা বিষয়ে বক্তব্য ও চিন্তাভাবনা বাংলা ভাষায় কিছু না কিছু পাওয়া যায়। কিন্তু শিয়া - সুন্নি ঐক্যের এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাঁর চমৎকার বক্তব্যের অনুবাদ কোথাও না পেয়ে সবার সাথে শেয়ার করার উদ্দেশ্যেই অনুবাদ করে ফেললাম। আরেকটি বিষয় উল্লেখ করা প্রয়োজন। মূল অডিও কোথাও কোথাও শুনতে বা বুঝতে অসুবিধা