এখন ভোর। এমন সময়ে ব্লগ লেখা হয়না অনেকদিন হল। সর্বশেষ কবে এমন পবিত্র একটা সময়ে ব্লগ লিখেছিলাম ? ঠিক মনে পড়ে না। সম্ভবত খুব বৃষ্টি হচ্ছিল সেদিন, আর ছোটবেলার বৃষ্টির স্মৃতিগুলো প্রিন্টারের আবেগহীন অক্ষরে বেরিয়ে এসেছিল।
অনেকদিন পর আজ তেমনি করে লিখতে মন চাইছে। ঐ লেখাটা ছিল, খুব সম্ভব দু’বছর আগে। তারপর কতদিন গিয়েছে ! কিন্তু ফজরের পবিত্রতা নিয়ে বসে আর লেখা হয়ে ওঠেনি। আজও লেখা হত না, গত কয়েকদিন যাবৎ ফজরের পর পিসিতে বসে লেখার কাজটা শেষ করছি, কিছুতেই অন্য কিছু করা হয়ে ঊঠছে না, না প্রোগ্রাম, না গান শোনা / মুভি দেখা কিংবা প্রিয় ব্লগ পড়া। আজও লেখার কাজটা করছিলাম, পাসওয়ার্ড এন্টার করে কেবল ফাইলে ঢুকেছি, এমন সময়ে কয়েকটা ব্লগ পড়তে মন চাইল। দুয়েকটা ব্লগ পড়ে লেখার সোর্স ফাইলে ঢুকলাম আবার আর এমন কিছু পড়লাম, যা মন খারাপ করিয়ে দিল।
লেখার কাজ লাটে উঠল – আমি ব্লগ লিখতে বসে গেলাম। তারপর আবার, ফজরের আগ দিয়ে নির্লিপ্ত এক স্বপ্ন দেখেছি। স্বপ্ন দেখে পর খাট থেকে পা নামিয়ে মেঝেতে ঠেকিয়ে বসে থাকলাম খানিক।
এরপর নামাজ।
এরপর কম্পিউটার।
এরপর ব্লগ - কিন্তু পারছি না। আমি ব্লগ লিখতে পারছি না কেন ? ‘ব্লগ লিখতে পারছি না’,' এসব কথা লিখলেই তো একটা ব্লগ হয়ে যায়। কিন্তু হাবিজাবি লেখা লিখতে চাইনা, লিখলে পরে অশান্তি লাগে।
রুমের পাশের বারান্দার ভেন্টিলেটরটা আমি ছোটবেলায় ভেঙে দিয়েছিলাম খানিকটা, যেন চড়ুই পাখি এসে বাসা করতে পারে। তারপর ঠিকই চড়ুই এলো, সংসার পাতল, প্রতিদিন ফজরে আমার ঘুম ভাঙাতে লাগল। ঘুম ভেঙে পর্দা অল্প একটু সরিয়ে আমি চড়ুই জোড়ার খেলা দেখতাম। আর বারান্দার দরজাটা যতই সাবধানে খুলতাম না কেন, ওরা টের পেয়ে যেত এবং চলে যেত।
একবার চড়ুই এর বাচ্চা পড়ে গিয়েছিল বারান্দার মেঝেতে, আর আমি পরে গিয়ে দেখলাম সুকি সেটাকে খেয়ে ফেলেছে, পালকগুলো ওর পিরিচের ‘পর পড়ে ছিল। আমার এত খারাপ লাগল !
কে জানে, হয়তো একইসাথে বিড়াল আর পাখিকে ভালোবাসতে নেই। আমি সুকির গালে খানিক চড়-থাপ্পড় দিলাম। বহুদিন পর পাখি খেতে পেরে সুকি তখন খুশিতে ‘ইয়াম ইয়াম’ শব্দ করছে, আমার মারে ওর কিছুই হল না।
বেশ কয়েকবছর হয়ে গেল, এখন আর পাখি এসে বাসা বাঁধে না.....।
আমার মনে আছে, সুকিকে যখন ওষুধ খাওয়াতাম, – ছেড়ে দেবার পর কী লাফালাফিটাই না করত। সারা বারান্দায় থুথু ছিটিয়ে বেড়াত। কিন্তু ততক্ষণে ওষুধ পেটের ভিতর !
আমার প্রথম বিড়ালটাকে খুব আদর করতাম। কাপড়ে জড়িয়ে পায়ের পর বসাতাম, আর মাথায় হাত বুলিয়ে দিতাম ! এইভাবে টেবিলে বসে পড়তাম আমি। মাঝে মাঝে সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখতাম আমার পায়ের ‘পর মাথা রেখে ঘুমিয়ে আছে। ভাইয়া বিড়াল পছন্দ করত না, কিন্তু একদিন ও গিয়ে ভাইয়ার পিঠে হেলান দিয়ে বসে পড়ল - আমরা তো হেসেই খুন। ভাইয়াও আর কিছু বলতে পারল না।
তৃতীয় আর চতুর্থ বিড়াল - ওরা তখন সবে লাফ দিতে শিখেছে, একদিন দেখি বাসায় নাই। নিশ্চয়ই বারান্দা দিয়ে বাইরে ! কিন্তু ওদের মা আমার কাছে এসে কান্নাকাটি করতে লাগল। আমি ফলো করে গিয়ে দেখি বাড়িওয়ালার চ্যাংড়া দারোয়ান দুটো ওদেরকে বস্তায় ভরে পিটিয়ে পর মাথায় পানি ঢালছে। আমি তো কাঁদতে কাঁদতে বাসায় এসে আম্মুকে বলে দিলাম, আর আম্মু গিয়ে ওদের ধমক দিয়ে বিড়ালগুলো বাসায় নিয়ে এলো। তারপর আমি আর মেজাপু সে বিড়ালের কী যত্নটাই না করেছিলাম। আর যীনাতও। দিনের মধ্যে যে কতবার সাবান দিয়ে হাত ধুতে হত….....।
প্রায় মারাই গিয়েছিল বিড়াল দুটো।
সেসময় মেজাপুর ক্লাস টেনের টেস্ট এক্সাম চলছে - “পরীক্ষার হলে গিয়েও আমার মাথায় টেনশান, বিড়ালগুলোর কী হল। আমি কাঁটায় কাঁটায় ৮০ এর আনসার করে চলে এলাম বাসায়।”
আমি সম্ভবত তখন ক্লাস ফোর কি ফাইভে পড়ি। ঐ সময়গুলোর কথা কিছুতেই ভুলবার নয়। আর এটাও ভুলবার নয় যে তেতলার বারান্দা দিয়ে বিড়াল নিয়ে আমাদের কান্নাকাটি দেখে নিলয় হেসেছিল। ওর মুখে এই কথাটা শোনার পর ওকে খুব নিষ্ঠুর মনে হয়েছিল আমার - এমন জিনিস নিয়ে মানুষ হাসতে পারে ! অবশ্য কে জানে, আমাদের স্কাই ভিউটা কেমন ছিল।
ফজরের সময় শেষ হয়েছে অনেক্ষণ হল।
আমি কম্পিউটারেই বসে থাকলাম।
ঘরটা এখনো অন্ধকার করে রেখেছি, অথচ পিছনের জানালা দিয়ে আলো জোর করে ঢুকে পড়ছে।
পাখির কিচিরমিচির শোনা যাচ্ছে। ফজরের পর কাকের ডাকটাও অনেক ভালো লাগে।
দুনিয়া জেগে উঠতে শুরু করেছে। আমাকেও দৈনন্দিন কাজে ডুবে যেতে হবে।
এখন আকাশটা খুব সুন্দর লাগছে। আমার কলেজের আকাশের মতন, যেদিন খুব বৃষ্টি হয়েছিল।
আজ তেমনি করে বৃষ্টি হোক।
নূরে আলম।
এপ্রিল ৫, ২০১১।
ashole, ei dhoroner lekha tomar sathe jay na ;) ager moto political affairs niye likhte suru koro, coz politics ar nure alam eke oporer poripurok!! ;)
উত্তরমুছুনreading your comment, I just took a look at my blog archive and found only one blog about politics, it's in August 5, 2009. The rest of my posts (34 in number so far) don't contain anything political !
উত্তরমুছুনwhatever, thanks for comment. But politics is almost out of my brain these days. I am much more busy with something else.
dhur! blogspot na, some where in er kotha boltesi ;(
উত্তরমুছুনbiral nie onek ghotona mone pore gelo....
উত্তরমুছুনcolleger kon diner kotha bollen sure na, but amaro ekta diner kotha khub specially mone porchhe.